উপ-সম্পাদকীয় – Bangla Green News https://bgn24.com সংবাদে নতুনত্বের সূচনায়! Sat, 17 Sep 2022 14:50:01 +0000 en-US hourly 1 https://wordpress.org/?v=6.8.1 বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রাথমিক শিক্ষা, বর্তমান এবং ভবিষ্যত https://bgn24.com/?p=2989 https://bgn24.com/?p=2989#respond Sat, 17 Sep 2022 14:50:01 +0000 https://bgn24.com/?p=2989 বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রাথমিক শিক্ষা, বর্তমান এবং ভবিষ্যত!

জাতীয় জীবনে প্রাথমিক শিক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সামগ্রিক জনসংখ্যাকে দক্ষ করে গড়ে তোলার ভিত্তিমূল হলো প্রাথমিক শিক্ষা। তাই আর্থ-সামাজিক শারীরিক মানসিক সীমাবদ্ধতা এবং ভৌগলিক অবস্থান নির্বিশেষে দেশের সকল শিশুর জন্য মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণের সমান সুযোগ করা রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়িত্ব। শিক্ষার এই স্তর পরবর্তী সকল স্তরের শিক্ষা ভিত্তি সৃষ্টি করে বলে যথাযথ মানসম্পন্ন উপযুক্ত প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা অপরিহার্য। প্রাথমিক শিক্ষার পর অনেকে কর্মজীবন শুরু করে। তাই গুনগত মানের প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা আজ যুগের দাবি যা তাদের পেশাগত জীবনে সহায়ক হয়।

উন্নয়নের জন্য শিক্ষা বিষয়টি আজ বিশ^জনীন যেহেতু উন্নয়নের প্রধান অনুষঙ্গ হচ্ছে শিক্ষা আর সকল স্তরের শিক্ষার ভীত হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা সেহেতু প্রাথমিক শিক্ষার গুরুত্ব আজ সর্বজন স্বীকৃত। প্রাথমিক শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে গরহমধঃ (১৯৯৫) ব্যক্ত করেন যে, যদি কোন দেশের প্রাথমিক শিক্ষার সুযোগ আরেকটি দেশের চেয়ে ৯০ শতাংশ বেশি থাকে, তাহলে ৩০ বছর পর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার অন্তত ৭৫ শতাংশ বেশি হবে।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের সফল নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ করার পর স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানে প্রাথমিক শিক্ষাকে রাষ্ট্রের গুরুত্ব পূর্ণ দায়িত্ব হিসাবে ঢেলে সাজানো হয় এবং স্বাধীনতা পরবর্তী রাষ্ট্রে নি¤œলিখিত বিধান গুলো সুষ্পষ্ট করা হয়।

একটি অভিন্ন জনসম্পৃক্ত ও সার্বজনীন শিক্ষা ব্যবস্থা এবং সকল শিশুদের জন্য বিনামুল্যে ও বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা প্রসার যা আইন দ্বারা নির্ণয় করা যেতে পারে। শিক্ষাকে সমাজের চাহিদা পূরনে সক্ষম এমন প্রশিক্ষিত ও প্রনোদিত নগারিকদের বের করা। একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিরক্ষরতা দূরীকরণ আইন দ্বারা নির্ধারণ করা যেতে পারে।

সরকার জাতীয় দায়িত্ব হিসাবে প্রাথমিক শিক্ষাকে মৌলিক অধিকার স্বীকার করে যা বাংলাদেশের একটি নতুন যুগের সূচনা করবে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে প্রাথমিক শিক্ষাক্ষেত্রে নবজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৩৬১৬৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ১,৫৬,৭২৪ জন শিক্ষককে সরকারি করে প্রাথমিক শিক্ষার গতির সঞ্চার করেন।একটি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রাথমিক শিক্ষার গুরত্ব অপরিসীম। বর্তমান সরকার প্রাথমিক শিক্ষাকে অভ্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছেন।

বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পিতার আদর্শিক চিন্তার ধারাবাহিকতায় ০৯/০১/২০১৩ সালের ২৬,১৯৩ টি রেজিষ্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েকে জাতীয়করণ এবং ১,০৩,৮৪৫ জন শিক্ষকের চাকুরী জাতীয়করণ করেন। প্রাথমিক শিক্ষাখাতকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে বাজেটে বরাদ্দ বেশি রাখা হচ্ছে। এছাড়া প্রাথমিক শিক্ষা কর্মসূচী-৪ এর মাধ্যমে বিদ্যালয়ে বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। বিদ্যালয়ে প্রাক্ প্রাথমিক শ্রেণি চালু করণ। প্রাক প্রাথমিক শ্রেণি সজ্জিত করনের জন্য আলাদা বরাদ্দ প্রদান এবং ২০২৩ সাল থেকে দুই বছর মেয়াদী প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা চালুকরন
বিদ্যালয়ে গমনোপযোগী শিশু ভর্তির হার প্রায় শতভাগ নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রতিটি শিক্ষার্থীর উপবৃত্তি নিশ্চিত করা হয়েছে। ফলে প্রাথমিক স্তরে ঝরে পড়া রোধ করা সম্ভব হয়েছে।

বছরের ১ম দিনেই বিনামূল্যে শতভাগ নতুন বই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে। ২০১৯ সাল থেকে অভিন্ন প্রশ্ন পত্রে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা গ্রহণ করা হচ্ছে। ভিশন-২০২১ অর্জনের লক্ষ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ল্যাপটপ, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর এবং ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান করা হয়েছে, যা প্রাথমিক শিক্ষাকে যুগোপযোগী করতে সহযোগিতা করছে। পিটিআই সমুহে আইসিটি ল্যাব স্থাপন করে শিক্ষকদের আইসিটি এডুকেশন প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। এতে করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আনন্দঘন পরিবেশে শিক্ষা লাভের সুযোগ পাচ্ছে। ই মনিটরিংয়ের মাধ্যমে প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করা হচ্ছে।

শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য প্রতি বছর আন্তঃ প্রাথমিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা এবং বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপ ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলতুন্নেছা গোল্ড কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ২০১০ সাল থেকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নেতৃত্বের মনোভাব এবং সেবামূলক মানসিকতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে স্টুডেন্ট কাউন্সিল ও ক্ষুদে ডাক্তার টিম গঠন করা হয়েছে। জেলা পর্যায় শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের বিদেশ গমন এবং দক্ষতা সম্পন্ন শিক্ষকদের বিদেশে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করার সুযোগ দেয়া হচ্ছে। মোট কথা আজকের শিশুকে ভবিষ্যতে দক্ষ এবং সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সরকার নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

ভবিষতে প্রাথমিক শিক্ষার জন্য জরুরী
প্রতিটি বিদ্যালয়কে ১ শিফটে রূপান্তর,শিক্ষক ঘাটতি পূরণ, প্রয়োজনীয় শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ , শিক্ষকদের সম্মানজনক ও উচ্চতর বেতন গ্রেড, বিভাগীয় পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষকদের পদন্নোতির ব্যবস্থা করা, দক্ষ ও পরিশ্রমী শিক্ষকদের জন্য বিশেষ প্রনোদনার ব্যবস্থা করা, ভাসমান শিশুদের মূল শিক্ষা ধারায় এনে শিক্ষার ব্যবস্থা করা। বর্তমানে শিক্ষা বান্ধব সরকার দেশের ব্যাপক উন্নয়ন করে জনগণের জীবন যাত্রার মান বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছে। এরপরও প্রাথমিক শিক্ষায় বিরাজমান কতিপয় চ্যালেঞ্জ কাঙ্খিত উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ করছে।

শিক্ষা ও শিক্ষকের উপর থেকে বিরাজমান বৈষম্য দূর করা জরুরী। বিশ্বের সব দেশের শিক্ষকদের যোগ্যতা ও মর্যাদা এক ও অভিন্ন। স্বাধীন সার্বভৌম বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় এক ও অভিন্ন মর্যাদা নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষক পরিবার মাথা উঁচু করে মর্যাদার আসনে আসীন হোক একজন শিক্ষক হিসাবে একান্ত কাম্য।

শাহিনা আফরোজ
প্রধান শিক্ষক,সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়।

]]>
https://bgn24.com/?feed=rss2&p=2989 0
একটি জীবন যুদ্ধের অবসান, বাকি যোদ্ধারা কবে শেষ করবে যুদ্ধ https://bgn24.com/?p=2707 https://bgn24.com/?p=2707#respond Sun, 21 Aug 2022 06:25:55 +0000 https://bgn24.com/?p=2707 একটি জীবন যুদ্ধের অবসান, বাকি যোদ্ধারা কবে শেষ করবে যুদ্ধ

গতকাল একটা উপসম্পাদকীয় লিখেছিলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সন্তোষ রবিদাশ কে নিয়ে তার লেখা তারও তার মায়ের করুনগাধা ছিল আমাদের লেখার বিষয়বস্তু। যেন আমাদের লেখাটি পড়েছেন কলগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী অফিসার সিফাত উদ্দিন ও মৌলবী বাজারের জেলা প্রাশাসক মীর নাহিদ আহসান।

মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার শমসেরনগরের চা–শ্রমিক মারের সন্তান কে চাকরি দিতে আজ রোববার বিকেলে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে তাঁকে ডাকা হয়েছে। একটি স্কুলে খণ্ডকালীন চাকরি পাচ্ছেন তিনি। কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, কাল বিকেলে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সন্তোষকে ডাকা হয়েছে। কমলগঞ্জ সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে তাঁর চাকরির ব্যবস্থা করা হয়েছে। আজ বিকেলে ডিসি স্যার সন্তোষের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেবেন। এ বিষয়ে সন্তোষ রবি দাস বলেন, আজ সকালে কমলগঞ্জের ইউএনও তাঁকে ফোন দিয়ে চাকরির জন্য আবেদনপত্র তৈরি করতে বলেন। কমলগঞ্জ সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি বরাবর একটি আবেদনপত্র তৈরি করতে বলা হয় তাঁকে।

কমলগঞ্জ সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রনেন্দ্র কুমার দেব প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগামীকাল সন্তোষ রবি দাসের আমাদের স্কুলে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে যোগদানের কথা রয়েছে। খণ্ডকালীন শিক্ষকের যে সম্মানি তাঁকে সেই সম্মানি দেওয়া হবে। যত দিন পর্যন্ত তিনি কোনো ভালো চাকরি না পান, ততদিন পর্যন্ত তিনি আমাদের এখানে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে চাকরি করতে পারবেন।

একজন মায়ের হয়তো কষ্টের অবসান হলো কিন্তু হাজার হাজার মা এখনো কষ্টে আছে বড় কষ্টে চাল ভাজা আর চা পাতা ভর্তা কতক্ষণ খাওয়া যায়। যে চায়ে চলে আমাদের ভোট, যে চায়ে ভেজে আমাদের ঠোঁট। আমরা কি লাল চায়ে শ্রমিকের রক্ত খুজে যাবো এই জুগে মাত্র ১২০ টাকা হাজিরা তা বেড়ে হলে ১৬৫ টাকা। আমরা মাননীয় কতৃপক্ষের নিকট আকুল আবেদন করছি চা শ্রমিক দের খেয়ে বাঁচার মুজুরীটা দৈনিক ৩০০ করা হোক।

বেদুইন হায়দার লিও
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক

]]>
https://bgn24.com/?feed=rss2&p=2707 0
আত্মোৎসর্গের আনন্দ উৎসব https://bgn24.com/?p=2211 https://bgn24.com/?p=2211#respond Sat, 09 Jul 2022 02:57:22 +0000 https://bgn24.com/?p=2211 আত্মোৎসর্গের আনন্দ উৎসব
এম এ কবীর

ষষ্ঠ হিজরিতে ঈদুল আজহার প্রচলন। ঈদুল আজহা প্রতি বছর আনন্দের ও ত্যাগের পয়গম নিয়ে হাজির হয়। ঈদুল আজহাকে ঈদুল কবির অর্থাৎ মহান ঈদ বলা হয়। আজহা শব্দ জুবেহ থেকে উৎপত্তি। জবেহ করা ক্রিয়াপদ, আর আজহা অর্থাৎ জুবেহ বিশেষ্য পদ যার অর্থ কোরবানি। কোরবান বা কোরবানি শব্দের অর্থ উৎসর্গ বা ত্যাগ। এ শব্দটি কুবরের শব্দ মূল থেকে উৎপত্তি। কুবরের অর্থ নৈকট্য বা সান্নিধ্য। তাহলে ঈদুল আজহার অর্থ দাঁড়ায় কোরবানি বা উৎসর্গ বা ত্যাগের আনন্দ। ঈদুল আজহায় আল্লাহর রাস্তায় ত্যাগ ও কোরবানির চেতনা ভাস্বর হয়ে ওঠে। ঈদ সমাজের সব ভেদাভেদ ও সীমানা মুছে দিয়ে মানুষে মানুষে মহামিলন ঘটায়।

ধনী-গরিব, উঁচু-নিচু নির্বিশেষে সব মানুষকে এক কাতারে দাঁড় করায় ঈদ। ঈদের দিনে প্রত্যেক মুসলমান নর-নারী আনন্দকে একত্রে উপভোগ করেন। ঈদ আনন্দের মধ্যে দিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ মর্মবাণী সবার কাছে প্রতিধ্বনিত হয় ‘সকলের তরে সকলে আমরা’ এ মর্মবাণী সব অন্যায় অবিচার ও অসাম্যকে অতিক্রম করে এক ভ্রাতৃত্ববোধের প্রেরণা জোগায়। পৃথিবীর ঊষালগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত কালের পরিক্রমায় হাজারো মহামানবের আগমন ঘটেছে এ ধরাপৃষ্ঠে। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন হজরত ইবরাহিম আ.। যিনি স্বীয় প্রাণ কলিজার টুকরা হজরত ইসমাঈল আ.-কে কোরবানি করতে উদ্যত হয়েছিলেন। সন্তানও বাবার ছুরির নিচে শিরকে নত করে দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে আজও চির অমর হয়ে আছেন বিশ^বাসীর কাছে। সে ঘটনাকে কেন্দ্র করে মহান আল্লাহ কোরবানির প্রতীক হিসেবে পশু কোরবানি করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। তাই বিশ্বের কোটি মুসলমান এ বিধানটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে প্রতি বছর পালন করে থাকে।

শরিয়তের পরিভাষায় কোরবানি বলা হয়, জিলহজ মাসের ১০, ১১ ও ১২ তারিখে আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য নির্দিষ্ট গৃহপালিত পশু আল্লাহর উদ্দেশ্যে জবাই করা। ইসলামে অনেক ধরনের কোরবানি বা ত্যাগের বিধান রয়েছে। আমাদের জীবনে বিভিন্ন ধরনের কোরবানি রয়েছে। এক ধরনের কোরবানি হলো জানের কোরবানি যেমন- নামাজ, রোজা ইত্যাদি বিধান। এগুলো পালন করতে গিয়ে নিজের দেহকে কষ্ট দিতে হয়। আরেক ধরনের কোরবানি হলো মালের কোরবানি যেমন- দান-সাদাকাহ, জাকাত ইত্যাদি। আরেক ধরনের কোরবানি হলো মনের কোরবানি, অর্থাৎ মনের খায়েশ নিজের প্রবৃত্তি দমন করার কোরবানি। অন্যান্য কোরবানির মতো এটিও একটি বড় কোরবানি। কারণ, মানুষের জন্য জানমাল ব্যয় করা সহজ, অর্থাৎ জানমালের কোরবানি দেয়া সহজ কিন্তু মনের কোরবানি দেয়া কঠিন। মানুষ অকাতরে নিজের সম্পদ ব্যয় করতে সহজে প্রস্তুত হয়ে যায়, কিন্তু নিজের মনের ধ্যান-ধারণা নিজের মনের বুঝ, নিজের মনের যুক্তি সহজে ছাড়তে প্রস্তুত হয় না। কেননা, ঈদুল আজহার পশু কোরবানির মাধ্যমে মালেরও কোরবানি হয়, একই সঙ্গে মনেরও কোরবানি হয়। কোরবানির পশু জবাই করতে মোটা অঙ্কের অর্থ ব্যয় হয়, এই অর্থের প্রতি মনের যে ভালোবাসা সেই ভালোবাসাকে কোরবানি করতে হয়।

আল্লাহ পাক হজরত ইবরাহিম আ.-কে স্বপ্নের মাধ্যমে আদেশ দেন তোমার সবচেয়ে প্রিয় বস্তুকে কোরবানি করে দাও। তখন ইসমাঈল আ.-এর বয়স সাত বছর মতান্তরে ১৩ বছর ছিল। নবীদের স্বপ্ন ওহি, তাই নবীরা যা স্বপ্ন দেখেন তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তাই স্বপ্ন অনুযায়ী তিনি পুত্রকে কোরবানি করার জন্য মিনার ময়দানে নিয়ে গেলেন। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘অতঃপর সে যখন পিতার সঙ্গে চলাফেরা করার বয়সে উপনীত হলো, তখন ইবরাহিম আ. ইসমাঈলকে বললেন, হে প্রিয় বৎস!

আমি স্বপ্নে দেখেছি, তোমাকে জবাই করছি; এখন তোমার অভিমত কি বলো, ইসমাঈল আ. বললেন, আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে, তাই করুন। আল্লাহ চাহে তো আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন।’ (সূরা সাফফাত-১০২) তাফসিরে বলা হয়েছে, ইসমাঈল স্বীয় পিতাকে বললেন, আমাকে শক্ত করে বাঁধবেন, যাতে আমি নড়াচড়া করতে না পারি। নড়াচড়া করলে আপনার জবাই করতে কষ্ট হবে, আপনার গায়ে রক্ত ছিঁটে গিয়ে লাগবে। আর ছুরিটাকেও ভালোভাবে ধারালো করে নিন, যাতে তাড়াতাড়ি জবাই সেরে ফেলতে পারেন। এভাবে হজরত ইবরাহিম আ. পুত্রকে জবাই করার উদ্যোগ নিলেন। (তাফসিরে মা’আরেফুল কোরআন) আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তারা পিতাপুত্র উভয়ে যখন আল্লাহর হুকুমের আনুগত্য করার জন্য নিজেদের সোপর্দ করল, আর ইবরাহিম স্বীয় পুত্রকে জবাই করার জন্য উপুড় করে শোয়ালো, তখন আমি তাকে ডাক দিয়ে বললাম, হে ইবরাহিম! তোমার স্বপ্নকে তুমি বাস্তবে পরিণত করেছ। এটা ছিল এক মহাপরীক্ষা। এই পরীক্ষায় তুমি উত্তীর্ণ হয়েছ। আল্লাহ বলেন ‘আমি তার পুত্রের বদলে একটি মর্যাদাবান দুম্বা জান্নাত থেকে পাঠিয়ে দিলাম।’ (সূরা সাফফাত : ১০৩-১০৭)

হজরত ইবরাহিম আ.-এর শিক্ষাকে অব্যাহত রাখার জন্য আমাদের ওপরও কোরবানির বিধান রাখা হয়েছে। ঈদ মুসলমানদের একান্ত নিজস্ব সংস্কৃতিরই একটা অংশ। ঈদের আনন্দ অন্তর থেকে উপলদ্ধি করতে পারে একমাত্র মুসলমানরাই। ঈদুল আজহায় আল্লাহ্-তায়ালার প্রতি হজরত ইবরাহিম (আ.) এর সবচেয়ে প্রিয় জিনিস উৎসর্গ করার যে আনন্দ তাও মুসলমানদেরই একান্ত ও নিজস্ব।

কালের চাহিদা অনুযায়ী মুসলিম জাতি তার আদর্শ সামনে রেখে জাতির অস্তিত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব রক্ষার প্রয়োজনে কোরবানি দেন। কোরবানির পশু জবাই আসলে প্রতীকী। কোরবানি দেয়ার রীতিটি পৃথিবীর আদিকাল থেকেই চলমান। মানবজাতির আদি পিতা হযরত আদম (আ.)-এর সময়কালেও কোরবানির রেওয়াজ চালু ছিল। কোরবানি হযরত আদম (আ.)-এর সুন্নত ও আদর্শ। সে সময় কোরবানিকৃত মাংস পাহাড়ের চূড়ায় রেখে আসলে তা যদি আকাশ থেকে অগ্নিবর্ষিত হয়ে পুড়ে যেত তাহলে কোরবানি আল্লাহ কবুল করেছেন বলে প্রতীয়মান হতো। যথার্থ আনুগত্য প্রদর্শন, তার সন্তুষ্টি ও মানবকল্যাণে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করার জন্য ধর্মীয় অঙ্গীকার ঘোষণায় সামাজিক আনন্দের উৎসব হিসেবে ঈদুল আজহা উদ্যাপিত হয় সারা বিশ্বে। এ উৎসব আত্মবিশ্লেষণ ও আত্মশুদ্ধিসহ পশুত্ব কোরবানির উৎসব। ঈদুল আজহা ত্যাগের আত্মসমর্পণের এবং আত্মোপলব্ধির মহান স্মারক।

কোরবানি শুধু একটি আনন্দ উৎসব নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ইতিহাস, ঐতিহ্য, শিক্ষা ও দর্শন। ঈদুল আজহা আত্মোৎসর্গের প্রেরণায় উজ্জীবিত এক অনন্য সাধারণ আনন্দ উৎসব। কোরবানি দেয়ার ক্ষেত্রে হজরত ইব্রাহিম (আ.) সর্বশ্রেষ্ঠ দৃষ্টান্ত এবং সর্বযুগের মানুষের জন্য অনুস্মরণীয় ও অনুকরণীয় আদর্শ স্থাপন করেছেন। শুধু পশু নয়, প্রয়োজনে পশুত্বের কোরবানি দিতে হয়। প্রত্যেক মানুষের ভেতর একটি হিংস্র পশু আছে, যেটা আমাদের প্রতিনিয়ত অন্যায় ও পাপ কাজে উৎসাহিত করে এবং আত্মাকে পাপিষ্ট আত্মায় পরিণত করে। পশুত্ব হলো অপরিচ্ছন্ন শত কালিমাময় আত্মা অর্থাৎ পাপিষ্ট আত্মা। মানুষের আন্তরাত্মা পাপে ও গোনাহে ভরা, যেটার সম্মিলিত নাম পশুত্ব। সর্বপ্রথম এই পাপিষ্ট আত্মা অর্থাৎ পশুত্বকেই কোরবানি করার পর পশু কোরবানি করা উচিত। হযরত ইসমাইল (আ.) কে কোরবানি করার আগে হযরত ইব্রাহিম (আ.) নিজের জীবনকে কোরবানি করেছিলেন। হযরত ইব্রাহীম (আ.) এর পরিবার সারা মুসলিম উম্মাহর জন্য আদর্শ পরিবার। মুসলিম পরিবারের মধ্যে ধর্মীয়, নৈতিক মূল্যবোধ ও আদর্শবোধ স্মরণ করিয়ে দেয়। মুসলিম পরিবারের মূল্যবোধের ভিত্তি হলো আল কোরআন ও সুন্নাহ। এতে প্রতিফলিত হয়েছে হজরত ইব্রাহিম (আ.) এর আদর্শের তাত্ত্বিক ও বাস্তবরূপ। প্রত্যেক মুসলিম পরিবারের সদস্যদের মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হওয়ার জন্যই হজ ও কোরবানি।

[লেখক : ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক, সভাপতি, ঝিনাইদহ জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটি]

]]>
https://bgn24.com/?feed=rss2&p=2211 0
আমাদের কৃষির অন্তরায়,এম এ কবীর : ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক, কলামিস্ট ও সভাপতি, ঝিনাইদহ জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটি https://bgn24.com/?p=2146 https://bgn24.com/?p=2146#respond Wed, 06 Jul 2022 03:09:16 +0000 https://bgn24.com/?p=2146
  • আমাদের কৃষির অন্তরায়
  • এম এ কবীরঃ

    জীবনযাপনের,জীবনধারণের এবং জীবন সাজানোর বেশিরভাগ উপাদানের নিরবচ্ছিন্ন জোগানদার হলো প্রকৃতি। প্রকৃতি আমাদের কী না দেয়! খাদ্য, ফলমূল থেকে শুরু করে ওষুধ, পথ্য, পানীয়, কাপড়, এমনকি বাড়ি-ঘর নির্মাণের উপাদান। নিশ্বাস নেয়ার জন্য অক্সিজেন জোগান দেয়া, জীবন-জীবিকার উপায় সৃষ্টি, নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবস্থা, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সহায়ক ভূমিকা পালন-সবকিছুই প্রকৃতির অবদান। এমনকি আমাদের ভেতরের মানবিক আবেগ আর শৈল্পিক অনুভবকে জাগিয়ে তোলার অনুপ্রেরণাও প্রকৃতি। প্রকৃতিতে জীবজগৎ ও উদ্ভিদ জগতের যথার্থ সহাবস্থান আর সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য মানুষের নিজের টিকে থাকার পূর্বশর্ত।

    ভারতের বাঁধে ভাটির বাংলাদেশ খরায় শুকায়, হঠাৎ বানে ভাসে! ব্রহ্মপুত্র – বরাক অববাহিকার উজানে প্রাকৃতিক বন ধ্বংস করে চলে নির্বিচার বাণিজ্যিক বনায়ন, পাহাড় কাটা, পাথর উত্তোলনসহ খনিজ আহরণের বিশাল সব আয়োজন। প্রাকৃতিক বিন্যাসকে চ্যালেঞ্জ করা, আমূল পরিবর্তন করে দেয়া কোনো শক্তিশালী রাষ্ট্রের পক্ষে সম্ভব নয়। নদীকে একদিকে বাধাগ্রস্ত করলে অন্যদিকে সে যে গতিপথ খুঁজে নেয়, তা হয় অনেক বেশি বিধ্বংসী।

    একটার পর একটা প্রতারণার খবর বের হচ্ছে। এই প্রতারণা হচ্ছে নানা কৌশলে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে। সাধারণ মানুষের হাজার হাজার কোটি টাকা প্রতারকেরা নিয়ে যাচ্ছে। আইনের ফাঁক গলিয়ে তারা রেহাইও পেয়ে যাচ্ছে। সুকুমার রায় ছোটদের জন্য লিখেছেন প্রচুর। তার শিশুসাহিত্য সমগ্রে ‘পাজি পিটার’ নামক যে জনপ্রিয় চরিত্রটি আছে সেটা একজন প্রতারকের। পিটারের প্রতারণাগুলো অভিনব। তার লোক ঠকানোর কৌশল আমাদেরকে অভিভূত করে। যুবক পিটারের হয়তো সুযোগ ছিল সৎপথে জীবিকা নির্বাহের। সে যে তা করেনি গল্প পাঠে মনে হয়, সে রকম কোনো ইচ্ছেই তার ছিল না কখনও। প্রতারণাতেই তার সুখ, প্রতারণাতেই তার আনন্দ।

    শহিদুল ইসলাম,ঝিনাইদহের কালিগঞ্জ উপজেলার ভাতঘরা দয়াপুর সম্মিলিত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। অবসর কাটাতে ফলের বাগান করেন। বাগানে দার্জিলিং কমলা, ম্যান্ডারিন কমলাসহ অন্যান্য ফলের গাছ রয়েছে। গত বছর বাগানের ম্যান্ডারিন ও দার্জিলিং কমলা পাঁকার আগে প্রচুর রস ছিল তবে যখন পাঁকার সময় আসে তখন রস শুকিয়ে যায়। উপজেলার ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের কৃষক আসাদ শেখ ইউটিউব ও বিভিন্ন গণ মাধ্যমের ভিডিও দেখে চায়না কমলার চাষ করেন কিন্তু ফল পাকার পর দেখা যায় রস শুকিয়ে খাওয়ার অনুপযুক্ত হয়ে গেছে। ফল বিক্রি করতে না পেরে তিনি বাগান কেটে ফেলেন। যশোর জেলার চৌগাছা উপজেলার ২৫ জন কৃষক তাদের শতাধিক বিঘার চায়না কমলা গাছ একই কারণে কেটে ফেলেন। ঝিনাইদহের বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের আলমগীর হোসেন বলসুন্দরী কুলের চারা লাগিয়ে ফল আসার পর দেখেন অন্য জাতের কুলের চারা তাকে দিয়ে প্রতারিত করা হয়েছে। মাগুরার নাসির হোসেন ইউটিউবে ফাতেমা ধানের বাম্পার ফলনের ভিডিও দেখে ওই ধানের চাষ করে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। এই চিত্র সারা দেশের। হাজারো কৃষি উদ্যোক্তা ইউটিউব, ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উৎসাহিত হয়ে নতুন নতুন দেশি-বিদেশি ফল ফসলের চাষ করে দারুনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন,নষ্ট হয়েছে শত শত হেক্টর ফসলী জমি। ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তরা বলেছেন, বেকারত্ব ঘোচাতে কোন প্রশিক্ষণ ছাড়াই কৃষিখাতকে বেছে নিয়ে তারা ধোকায় পড়েছেন। তারা বিশ^াস করেন কৃষিখাত থেকে স্মার্ট রোজগার করা সম্ভব তবে সঠিক নির্দেশনার অভাব ও কৃষিখাতে প্রতারকদের দৌরাত্মের কারণে তারা এমন ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। শিক্ষিত কৃষি উদ্যোক্তারা জানান, অধিক মুনাফালোভী এক শ্রেণির উদ্যোক্তা যেকোন ফল ফসলের চারা উৎপাদন করে অথবা অন্য কোথা থেকে সংগ্রহ করে অধিক লাভের অসত্য গল্প শুনিয়ে ইউটিউব, ফেসবুক ও বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার করে। এর মাধ্যমে তারা প্রবাস ফেরৎ শিক্ষিত তরুণ, বেকার যুবক এবং যারা নিজের যায়গা জমি থেকে বাড়তি আয়ের চিন্তা করেন তাদের প্রলুব্ধ করেন। আগ্রহীরা না বুঝে সেই ফল ফসলের চারা লাগান,চাষ করেন। কয়েক বছর পর যখন ওই সকল উদ্যোক্তার বাগানের গাছে ফল আসে তখন তারা বুঝতে পারেন, তারা ধোকায় পড়েছেন। কালিগঞ্জ উপজেলার কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের শরিফুল ইসলাম ভিয়েতনামি নারিকেলের চারা লাগিয়ে ৪ বছরেরও গাছে ফল না আসায় এ বছর আবারও বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। বিরাজমান সমস্যা থেকে বের হয়ে আসতে তরুণ কৃষি উদ্যোক্তারা বলেছেন- চারা বিক্রেতাদের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের নিবন্ধন থাকা দরকার। নার্সারী পরিদর্শন করে মাতৃগাছের বয়স ও সংখ্যা অনুযায়ী চারা তৈরির সম্ভাব্যতা নির্ধারণ, চারা বিক্রির রেজিষ্টার সংরক্ষণ, নিবন্ধিত সকল নার্সারীতেই পর্যাপ্ত মাতৃ গাছ থাকা, চারা বিক্রির সময় ভাউচার দেয়া, বিভিন্ন বয়সী চারার মান অনুযায়ী দাম নির্ধারণ, সরকারিভাবে পরিক্ষীত নয় এমন কোনো বিদেশি ফল ফসলের চারা উৎপাদন এবং ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ করা, অঞ্চল ভিত্তিক মাটির গুনাগুন ও আবহাওয়া বিবেচনায় নিয়ে কোন ফল ফসল চাষ করলে কৃষক লাভবান হবে তা প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে বিলবোর্ড স্থাপনের মাধ্যমে কৃষকদের জানানো, কোনো উদ্যোক্তা বিদেশি ফল ফসলের চারা উৎপাদন করে সরকারিভাবে অনুমোদন না নিয়ে তা যেন বিক্রয় করতে না পারে সে বিষয়ে নজরদারী করা। কৃষি উদ্যোক্তা ও গণমাধ্যম কর্মী মিজানুর রহমানের মতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশি বিদেশি ফল ফসলের চাষ করে যারা প্রতারিত তাদের নিয়ে সেমিনার কিংবা মত বিনিময় সভা করার উদ্যোগ কৃষি বিভাগ নিতে পারে। তবে এরই মধ্যে যশোর অঞ্চলে সরকারিভাবে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পটিতে উচ্চমূল্যের ফসল উৎপাদন, শস্য উৎপাদনে বৈচিত্রতা আনা, নিরাপদ ফসল উৎপাদন, কৃষি পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, নারী ও তরুণ উদ্যোক্তা সৃষ্টি, কৃষি বাণিজ্যিকীকরণসহ নানা সুবিধা দিতে যশোর অঞ্চলে টেকসই কৃষি সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭১ কোটি ৩২ লাখ টাকা। আর এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ২৮ হাজার ৬২০ জন কৃষকের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে প্রকল্প এলাকায় উচ্চমূল্যের নিরাপদ ফসল উৎপাদন ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি হবে। এছাড়া ব্যয় সাশ্রয়ী ও ফলপ্রদ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে উচ্চ মূল্য ফসলের উৎপাদনশীলতা ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি ও উৎপাদন ব্যয় ২০ শতাংশ কম করে কৃষিকে লাভজনক করা হবে। পাশাপাশি খোরপোশ কৃষিকে বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তরের জন্য ১ হাজার ৮০০ জন শিক্ষিত তরুণ ও নারী কৃষি উদ্যোক্তা তৈরি করা হবে। ‘যশোর অঞ্চলে টেকসই কৃষি সম্প্রসারণ’ শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে এসব লক্ষ্য অর্জন করা হবে। কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর গত ৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। সভায় দেয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করায় প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে উপস্থাপনের সুপারিশ করা হয়েছে। অনুমোদিত এ প্রকল্প ২০২৭ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর (ডিএই)। প্রকল্পে বলা হয়েছে, দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার পুষ্টি চাহিদাপূরণ, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা এবং উৎপাদন থেকে বিপণন পর্যন্ত সকল পর্যায়ে কৃষককে লাভজনক করা আবশ্যক। এ উদ্দেশ্য অর্জনে উচ্চ মূল্যের ফসল উৎপাদন, টেকসই কৃষি প্রযুক্তির সম্প্রসারণ, সংগ্রহ এবং তরুণ উদ্যোক্তাদের কৃষির মূল ধারায় অর্ন্তভুক্ত করা অপরিহার্য।

    বাংলাদেশে পুষ্টিকর উচ্চমূল্যের শস্য উৎপাদন, কৃষি পণ্য বিপণনে অঞ্চলভিত্তিক সম্ভাবনা ও সুযোগ কাজে লাগানো, শিক্ষিত নারী, তরুণ ও যুব সমাজকে উদ্বুদ্ধ করে বাণিজ্যিক কৃষি ব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে অবদান রাখার জন্য প্রকল্পটি করা হয়েছে। প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, ৩৪ হাজার ৬৬২টি কৃষি প্রযুক্তি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে। এছাড়া ৬২টি কৃষি উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র নির্মাণ, ৩১৮টি বিদ্যুৎবিহীন কুলিং চেম্বার, ৯৩টি কৃষি প্রযুক্তি মেলা, ১২৪টি উদ্বুদ্ধকরণ ভ্রমণ, ৩ হাজার ৪৬৬টি মাঠ দিবস আয়োজন, ২ হাজার ৬৯২ ব্যাচ অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণ এবং ৩০ হাজার ৯৫৯টি কৃষি সরঞ্জামাদি ক্রয় করা হবে। প্রকল্পের আওতাভূক্ত জেলা ও উপজেলাগুলো হচ্ছে- যশোরের সদর, শার্শা, মণিরামপুর, কেশবপুর, ঝিকরগাছা, চৌগাছা, বাঘারপাড়া এবং অভয়নগর উপজেলা। মাগুরার সদর, শালিখা, শ্রীপুর ও মহম্মদপুর উপজেলা। ঝিনাইদহের সদর, মহেশপুর, হরিণাকুন্ডু, কোটচাঁদপুর, শৈলকুপা এবং কালীগঞ্জ উপজেলা। কুষ্টিয়ার সদর, দৌলতপুর, ভেড়ামারা, মিরপুর, খোকসা ও কুমারখালী উপজেলা। চুয়াডাঙ্গার সদর, দামুড়হুদা, জীবননগর, আলমডাঙ্গা এবং মেহেরপুরের সদর, মুজিবনগর এবং গাংনী উপজেলা। সূত্র জানায়, প্রকল্পটি নেয়ার আগে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ও মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়েছে। সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদনে সুনির্দিষ্ট প্রযুক্তি এবং কার্যক্রম প্রতিপালন করে কৃষি বাণিজ্যিকীকরণ, কৃষি উদ্যোক্তা সৃষ্টি এবং আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারণের স্বার্থে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের সুপারিশ করা হয়েছে। সম্ভাব্যতা যাচাই প্রতিবেদনে দেখা যায়, প্রকল্পের ঝুঁকি হিসাবে যশোর অঞ্চলে সাম্প্রতিক সময়ে শিলাবৃষ্টি, বজ্রপাত, ঘূর্ণিঝড় বৃদ্ধি এবং ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়াকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব ঝুঁকি এড়াতে প্রয়োজনীয় উপকরণ ও প্রযুক্তি সরবরাহ,বারিড পাইপ সেচ প্রযুক্তি সম্প্রসারণ, নিরাপদ উপায়ে চারা উৎপাদন এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের সুপারিশ করা হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের যশোর অঞ্চলের উপ-পরিচালক নুরুজ্জামান জানান, ‘যশোর অঞ্চলে টেকসই কৃষি সম্প্রসারণ’ প্রকল্প বাস্তবভিত্তিক। সরকার একটি সময় উপযোগী প্রকল্প গ্রহণ করেছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে কৃষি অর্থনীতির চিত্র বদলে যাবে। উপকৃত হবে কৃষক।

    বাংলাদেশকে বাঁচিয়ে রেখেছে যে কৃষি তার উন্নতি নিয়ে সরকারের পদক্ষেপের বিবরণ প্রতিনিয়তই শুনছে দেশের মানুষ। নেদারল্যান্ডস কৃষি খাতে বছরে মাথাপিছু ৩১৪ ডলার, ভারত ৩৪ ডলার ও মায়ানমার ২৬ ডলার বিনিয়োগ করে। সেখানে বাংলাদেশে মাত্র ১৬ ডলার বিনিয়োগ করা হয়। যে কারণে বাংলাদেশে হেক্টর প্রতি ধানের উৎপাদন ৪ হাজার ৭৩৫ কেজি, আর চীনে তা ৭ হাজার কেজির বেশি। অন্যদিকে দেশে কৃষিজমি কমে যাওয়া এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা সমস্যা বাড়ছে।

    দেশের ৭৮ লাখ হেক্টর আবাদি জমির মধ্যে ৫৫ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা যায়। এক হেক্টর মানে সাড়ে সাত বিঘা। বিঘায় গড়ে ২০ মণ ধান উৎপাদন ধরলে হেক্টরে ৫ টনের বেশি উৎপাদন হয়। তাহলে বোরো মৌসুমে ২ কোটি ৭৫ লাখ টন ধান উৎপাদন সম্ভব। আমন মৌসুমে দেড় কোটি টন আর আউশ মৌসুমে ৫০ লাখ টন ধান উৎপাদন তো সহজেই করা সম্ভব। তাহলে ৪ কোটি ৭৫ লাখ টন ধান উৎপাদন করতে খুব বেশি সমস্যা হওয়ার কথা নয়। ধান থেকে ৬৬ শতাংশ চাল উৎপাদন হয়। সে হিসেবে ৩ কোটি ১০ লাখ টন চাল তো উৎপাদিত হতেই পারে। দিনে গড়ে ৪০০ গ্রাম চাল খাই আমরা। ছোট শিশু থেকে মৃত্যুপথযাত্রী বৃদ্ধ ১৭ কোটি মানুষের সবাইকে এই হিসাবে ধরলে বছরে চাল লাগার কথা ২ কোটি ৪৮ লাখ টন। প্রশ্ন উঠছে,তাহলে খাদ্যঘাটতি কেন, বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবহার করে বছরে ৬০ লাখ টন খাদ্যশস্য আমদানি করতে হয় কেন, ধান ওঠার মৌসুমেই চাল আমদানিতে এত ব্যস্ত হতে হয় কেন, বছরব্যাপী চালের বাজার এত চড়া কেন? তেলের দাম বাড়ানোয় ধানের চাষ করাই দুষ্কর হয়ে গেছে। হাল চাষের খরচ বেড়ে গেছে। শ্যালো মেশিনে সেচের খরচ বেড়ে গেছে। খরচ বেড়েছে বলে কৃষক কি তাহলে ধান চাষ কমিয়ে দেবেন? না। কারণ ধান আবাদ না করে তার কোনো উপায় নেই। পেটের দায়ে এবং উপায় নেই বলে কৃষক যদি চাষাবাদ করে তাকে কি স্থায়ী উন্নয়নের কৃষি অর্থনীতি বলা যাবে?

    এম এ কবীর : ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক, কলামিস্ট ও সভাপতি, ঝিনাইদহ জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটি

     

    ]]>
    https://bgn24.com/?feed=rss2&p=2146 0
    শুভ জন্মদিন বীর শেখ কামাল https://bgn24.com/?p=1458 https://bgn24.com/?p=1458#respond Thu, 05 Aug 2021 15:14:40 +0000 https://bgn24.com/?p=1458

    শেখ কামাল একটি নাম নয় একটি প্রতিষ্ঠান। তিনি বঙ্গবন্ধুর ছেলে অথচ ছিলেন খুব সাধারণ।তিনি খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে ব্যাস্ত থাকতেন। আজকের আবহানি তার অবদান। তিনি দেশের সনামধন্য থিয়েটার ঢাকা থিয়েটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।

    সেই দলের সদস্য ছিলেন অভিনেত্রী ডলি জহুর। তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেন;

    শেখ কামাল রিহার্সাল শেষে বাসায় দিয়ে যেতেন । কারণ, ডলি জহুর তখন হাতিরপুলে থাকতেন। ডলি জহুরকে বাসায় পৌছে দিয়ে তারপর ধানমন্ডি ৩২ নাম্বারের বাসায় যেতেন শেখ কামাল।

    ডলি জহুর বলেন,
    আমি উনার ছোট বোন শেখ রেহানার বান্ধবী ছিলাম। ছেলেরা ছোট বোনের বান্ধবীদের সাথে কত রকম দুষ্টামী করে। উনি কোনদিন তাও করেননি। ভুল করেও বলেন নি – ডলি তোর হাতটা দেতো ধরি । এক কথায় কামাল ভাই ছিলেন আপন বড় ভাইয়ের মতই ভাই। শুধু আমি কেন, যেসব মেয়েরাই উনার সাথে মিশতো সবাই এই কথা স্বীকার করবেন। আর এই দেশের মানুষ তাকে নিয়ে কত রকমের অপপ্রচার চালালো। কামাল ভাই নাকি কার বৌকে (মেজর ডালিম) তুলে নিয়ে গেছেন হ্যান ত্যান। মানুষ এত মিথ্যাবাদী হয় কি করে, আমি ভেবে পাই না। স্বার্থ মানুষকে ভিতর-বাহির থেকেই নষ্ট করে দেয়।

    প্রেসিডেণ্টের ছেলে হয়েও তার কাছে সবসময় টাকা থাকতো না। এ নিয়ে অনেক ক্ষ্যাপাত ক্যাম্পাসেও তার বন্ধুরাও। যেদিন কামাল ভাইয়ের কাছে টাকা থাকত না, সেদিন রাতে হেঁটে যেতাম। যেদিন টাকা থাকত সেদিন যেতাম রিকশায়। কত রাতের পর রাত উনার সাথে আমি একা বাসায় ফিরেছি অথচ এক বারের জন্যও আমি তাকে আমার দিকে বাজে দৃষ্টিতে তাকাতে দেখিনি।

    তা ছাড়া কামাল ভাই ছিলেন প্রেসিডেন্টের ছেলে। বিশ্ববিদ্যালয়ে তার জন্য শত শত মেয়ে পাগল। কখনও কোনদিন আমরা তাকে সেসব মেয়েদের পাল্লায় পরতে দেখিনি। তিনি কি পারতেন না সেসব মেয়েদের সাথে নোংরামী করতে ??
    এখানেই শেষ নয়। সুলতানা কামালকে ভালবেসে বিয়ে করেছিলেন কামাল ভাই। সুলতানা আপা ছিলেন নামকরা একজন খেলোয়ার। বিশ্ববিদ্যালয়ে খেলা ধুলার জন্য তিনি এক নামে পরিচিত ছিলেন। অনেক লম্বা আর শক্ত পেটা শরীর। আমরা উনাকে ভয় পেতাম। সহজে কেউ সুলতানা আপার কাছে যেতাম না। ছেলেরাও ভয় পেত তাকে। এড়িয়ে চলত। সেই সুলতানা আপাকে পছন্দ করে বসলেন কামাল ভাই। আর তার হয়ে সুলতানা আপার কাছে এই কথাটা বলার দ্বায়িত্ব দেন আমাকে। আমি তো ভয়েই শেষ। না করে দিলাম। কিন্তু কামাল ভাইয়ের জোরাজোরিতে রাজী হলাম। কথা দিলাম সুলতানা আপাকে জানাবো যে কামাল ভাই আপনাকে পছন্দ করে। কিন্তু দিন যায়, মাস যায় জানানো আর হয় না। কি করে হবে ?? আমি যতবার সুলতানা আপার কাছে এইকথা বলতে গিয়েছি ততবারই ভয়ে আমার গলা শুকিয়ে গেছে। আমি ভীতু, তেলাপোকা দেখে মরে যাই এসব কত্তো রকমের কথা শুনালো কামাল ভাই।

    অবশেষে নিজেই একদিন সুলতানা আপাকে জানালেন তার মনের কথা। এবং হলেন প্রত্যাখ্যাত। সুলতানা আপা বলে দিলেন প্রেম ট্রেম করতে পারবেন না। এতই যদি ভাল লাগে তবে যেন বাসায় লোক পাঠায়। তাই করে- -ছিলেন কামাল ভাই।

    শেখ কামাল বঙ্গবন্ধুর সন্তান। বঙ্গবন্ধু তার অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে লিখেছেন শেখ মুজিব একদিন বসে ছিলেন শেখ হাসিনা ও শেখ কামাল খেলছিনেন হঠাৎ শেখ কামাল শেখ হাসিনা কে বলেছিল হাসু আপু হাসু আপু আমি তোমার আব্বা কে আব্বা ডাকি। সারাজীবন পিতার স্নেহ বঞ্চিত অথচ আদর্শ ধারণ করা শেখ কামাল আমাদের আদর্শ।
    আজ অমক নেতার অমক রা যখন দেশ অশান্ত করে তখন শেখ কামালের ইতিহাস হতে পারে ভালো রাজনীতিবীদদের অনুপ্রেরণা।

    বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর দেশের মানুষকে শান্ত রাখতে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের প্রতি ঘৃনার জন্ম দিতে সব রকমের চেষ্টা চালিয়েছে ঘাতকের দল।শেখ কামাল ও সেই অপচেষ্টার শিকার। ৫ টাকার বাদাম কিনে যে ছেলে তার ছোট বোন আর তার বান্ধবীদের খুশি করতে পারত না, তার নামেই ছড়ানো হয়েছে ব্যাংক লুটের কিচ্ছা-কাহিনী।
    আমি শুনেছি তৎকালীন এসপি মাহাবুব এর কাছে সেই রাতের কথা। ব্যাংক ডাকাতির কোন ঘটনায় ঘটেনি। বরং এসপি মাহাবুব রা মনে করেছিলেন সেই রাতের গাড়িটা গণবাহিনীর। আমরা ইতিহাস পড়ে জেনেছি জাসদ গণবাহিনীর গনবিরোধী কার্যকলাপের কথা।
    এগুলো ছিল তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার। নির্লোভ নিরহংকার মানুষ ছিলেন শেখ কামাল।

    খুনি মোস্তাক ফারুক গং রা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুর বাসায় যদি কিছু পেত তাহলে অপপ্রচার কি পরিমাণ বাড়ত তা বলা মুসকিল। পাওয়া যায়নি উল্লেখ করার মত তেমন কোন ব্যাংক একাউন্ট। তাই আর তারা বাড়াতে পারেনি অপপ্রচার।
    আজ ৫ই আগস্ট এই ক্ষনজন্মা, সাংস্কৃতিমনা তারুন্যের মডেল আবাহনী ক্রীড়া চক্রের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযুদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল এঁর ৭২ তম শুভ জন্মদিন। বিনম্র শ্রদ্ধা।দেশে আজ এমন মানুষদের বড় প্রয়োজন।

    ]]>
    https://bgn24.com/?feed=rss2&p=1458 0
    সাংস্কৃতিক পরাজয় ( বোধহীনের বোধোদয়) https://bgn24.com/?p=1435 https://bgn24.com/?p=1435#respond Fri, 30 Jul 2021 09:35:51 +0000 https://bgn24.com/?p=1435 আলোচনা চলছে একটি নাটক নিয়ে যেখানে সন্তানের অটিজম ও জেনেটিক কন্ডিশনকে মা বাবার পাপের শাস্তি হিসেবে ইংগিত করে দেখানো হয়েছে।
    কতটা অমানবিক!!!
    যিনি বা যারা কাজটাতে জড়িত তাদের বোধেই আসেনি বিষয়টা! বোধের গভীরতা নেই বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। সাংস্কৃতিক অঙ্গনে যে কেউ বিচরণ করতে চাইতেই পারে, তবে তাতে সংস্কৃতির ভাবমূর্তি নষ্ট করার দায়ভারও কিন্তু তাকেই নিতে হবে।
    স্বাধীন দেশে যা ইচ্ছে করার নাম”স্বাধীনতা” নয়। যে যেই কাজের জন‍্য যোগ‍্য , কাজটা তারই করা উচিত।
    ধরে নিলাম, আমার টাকা আর রুপ আছে। এখন যদি মনে হয় সুযোগ করে এই ফ‍্যাসফেসে কন্ঠে গায়িকা হবো, নায়িকা হবো। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নামকরা জনপ্রিয় শিল্পীকে আমার বিপরীতে কাষ্ট করে অভিনয়ে নেমে নিজের একটা “তকমা” জুড়ে নিলাম। তাতে কি পরিমাণ ক্ষতি আমি প্রফেশনালদের করলাম, শিল্পের ক্ষতি করলাম অনুভব করতে পারলাম কি!
    অনেকে অবশ‍্য বুঝেও তোয়াক্বা করছেন না। এর পেছনের কারন তো স্পষ্ট।
    ঐ ধরনের “তকমা” যুক্তরা আসলে মিডিয়ায় নিজের পকেটের টাকা বিনিয়োগ করে নিজস্ব মুল পেশার ও কর্মক্ষেত্রে ( পেশাদার শিল্পী এরা নয়)একটা সুবিধা নিতে ব‍্যস্ত। নায়ক,নায়িকা,গায়ক বা স্বঘোষিত তারকা! ইত‍্যাদি যে কোন পরিচিতি গড়ে তুললে সভ‍্য সমাজে জাতে উঠতে পারে বলে মনে করে এরা।
    বাস্তবতা হলো হ‍্যা, আপনি নিজের টাকা মিডিয়ায় ঢেলে নিজেকে অর্বাচিনদের কাছে এই লেবাসযুক্ত পরিচয় শো করে বাড়তি টাকা ” কামাই ” করছেন। ভাবছেন সম্মানও কিনছেন । কারন যত্রতত্র ইন্টাভিউ, টক শো তে কথা বলছেন। হোক তা নিজের বা অখ‍্যাত চ‍্যানেলে ।
    কিন্তু সম্মান???? সম্মান তো ভাই টাকায় কেনা সম্ভব নয় !!!

    আসলে প্রত‍্যেক মানুষের সম্মানের জায়গা তার যোগ‍্যতা অনুযায়ী স্ব – স্ব ক্ষেত্র। শুধু শুধু গালি খেয়ে, হাসির পাত্র হয়ে নিজেকে অপমানিত করে এরা। তাতে করে দেশের শিল্প আর সংস্কৃতিরও যে ক্ষতি হচ্ছে তার খেসারত তাকে দিতে হবে এমন আইন করা উচিৎ।তার হয়তো শখ পূরণ হলো, কিন্তু সারা বিশ্বে আমার দেশ ও সংস্কৃতিকর্মীদের সম্পর্কে কি ধারণা তৈরী হচ্ছে , সেটার নিয়ন্ত্রণ অবশ্যই সরকারকে করতে হবে। এখন সেই সময় এসেছে।
    সাহিত্যচর্চা ছাড়া আপনি একটা – দুইটা বই ছাপতে পারবেন। শখে গান, নাচ,অভিনয় সব করে পরিচিত মহলে আপনার শখের কীর্তিটি দেখাতে পারবেন, কিন্তু লেখক সাহিত‍্যিক কবি নায়ক বা গায়ক বা “তারকা” হয়ে উঠতে পারবেন না। এটাই সত‍্য।
    আলহামদুলিল্লাহ্। আমাদের এই প্রজন্মে অনেক অনেক মেধাবী যোগ্য নির্মাতা/ শিল্পী /তারকা আছেন। আমার ব‍্যক্তিগত অভিমতে যাদের অবশ্যই পুর্ববর্তী যোগ্য অগ্রজদের সাথে তুলনা করা যেতে পারে। তাদের দরকার সঠিক অভিভাবক – Captain of the ship.
    একজন পাঠক ,শ্রোতা, বা দর্শক শিল্পী/তারকা হিসেবে যোগ্য জনকেই স্বীকৃতি দেন। আর যোগ‍্যতার কারণেই সেই শিল্পী বা তারকা’ র জন‍্য পেশাদার প্রযোজক অথবা টিভি চ‍্যানেল অর্থ বিনিয়োগ করেন। দর্শক চাহিদার ভিত্তিতে শিল্পীকে কাষ্ট করতে হয়। যাকে অগণিত দর্শক তার হৃদয়ে স্থান দিয়ে ভালবেসে” তারকা” খ‍্যাতিতে ভূষিত করেন ।

    নিজের টাকা ইনভেস্টমেন্ট করে যিনি “শিল্পী ” পরিচয়ে পরিচিতি পেতে চান তার স্থিতিও ক্ষনকালের হয়ে থাকে। নিজ পেশা ঠিক রেখে রাজনীতি,মিডিয়াকে ব‍্যবহারের ( অপব‍্যবহারের) ধান্ধা ও অসাধু উদ‍্যেশ‍্য নিয়ে যারা আসে, তাদের থামাবার সময় এখন।পাশাপাশি না বুঝে নির্বোধেরা যারা ইমেজ তৈরী করতে যেয়ে গালি খাচ্ছে, দয়া করে পরিবারের সদস্য -বন্ধু- স্বজনেরা বাহবা বা উৎসাহ না দিয়ে এদের প্রতিহত করুন। কাউন্সেলিং এ পাঠান। ইউ টিউব, ওটিটি বা টিভি চ‍্যানেল যেখানেই হোক ভালো কিছুই আমরা গ্রহন করি।
    যারা বিভিন্ন সুন্দর ও গঠনমূলক কন্টেন্ট তৈরী করে সুন্দর সমাজ গঠন ও সামাজিক সচেতনতা তৈরী করছেন তাদের সাধুবাদ ও অভিবাদন।
    আর যারা অযোগ্য , সমাজের জন‍্য ক্ষতিকারক ও অপ্রতিরোধ‍্য আমরা তাদের বর্জন করি। তাদের দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে।
    একটা দেশের সংস্কৃতি সেই দেশের ঐতিহ্যকে তুলে ধরে, সম্মান বয়ে আনে। আর আমাদের সমৃদ্ধশালী ঐতিহ্যকে আমাদের নির্লিপ্ততায় আমরা বলি দিয়ে দিচ্ছি!
    তথ্য মন্ত্রণালয়ের বা সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব আছে নিশ্চয়ই। একটি টাস্কফোর্স গঠন করা দরকার যেখানে সমাজ, দেশ ও সাধারণ মানুষের ধর্মীয়, সামাজিক মূল‍্যবোধে আঘাত করে, দেশের সংস্কৃতির ভাবমূর্তি নষ্ট করে (বিকৃত ও বিতর্কিত কনটেন্ট নির্মাতা ও সংশ্লিষ্টদের) তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ ও বিচার করা হবে। দেশে একটি সম্প্রচার পর্যবেক্ষণ কমিশন করা দরকার।
    অভিনেতা অভিনেত্রী নয় শুধু , দায় আমাদের সকলের। যে দায় এড়াবার কোনোই পথ থাকবেনা অচিরেই এমন আইন ও তার বাস্তবায়ন দরকার ।
    আর একটি সুস্থ দেশজ সাংস্কৃতিক বোধ পারে এই সংকট থেকে বাচাঁতে।
    (ডাঃ আব্দুন নূর তুষার এর ফেসবুকের পোষ্ট পড়ে, তার কথার সমর্থনে এই লেখা )

    লেখকের নামঃ শামিম আহমেদ টপি ( সাংস্কৃতিক কর্মী,  সাধারণ সম্পাদক ঝিনেদা থিয়েটার ও সভাপতি বিপ্লবী বাঘা যতীন থিয়েটার )

    ]]>
    https://bgn24.com/?feed=rss2&p=1435 0
    মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষক ও সংশ্লিষ্টদের বাঁচান https://bgn24.com/?p=1119 https://bgn24.com/?p=1119#respond Tue, 04 May 2021 18:24:18 +0000 https://bgn24.com/?p=1119 করোনার কারণে একটি অনিদিষ্ট জীবনের দিকে ধাবিত বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ।দিনের পর দিন স্কুল বন্ধ থাকায় চিন্তিত বাবা-মা পাশাপাশি দেশের গুনিজনেরা কিন্তু স্কুল বন্ধ মানে কি শুধু ছাত্র – ছাত্রীরা বিপদে? এর সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা যারা আছেন কেমন আছেন ? ।এবার একটা পরিসংখ্যান দেওয়া যেতে পারে ।

    বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য বলছে, প্রাথমিক পর্যায়ে পড়ে প্রায় পৌনে দুই কোটি ছেলেমেয়ে।এনজিও পরিচালিত আর কিন্ডারগার্টেনসহ স্কুল আছে সোয়া লাখের কিছু বেশি। অর্ধেকই সরকারি স্কুল।

    মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা সোয়া কোটির কিছু বেশি। স্কুল আছে ২১ হাজারের কাছাকাছি। এর মধ্যে সরকারি স্কুল মাত্র ৬৭৫টি। কলেজ আছে মোট সাড়ে চার হাজারের মতো, বেসরকারিই বেশি। মোট শিক্ষার্থী প্রায় অর্ধ কোটি।

    দেশে বিশ্ববিদ্যালয় আছে ১৫১টি, দুই-তৃতীয়াংশই বেসরকারি। মোট শিক্ষার্থী ১২ লাখের কাছাকাছি। আলিয়া মাদ্রাসা, কারিগরি, ইংরেজি মাধ্যমসহ বিভিন্ন বিশেষায়িত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ছে ৫০ লাখের কাছাকাছি ছেলেমেয়ে। আমরা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান শিক্ষক মালিক ও অনান্য কর্মকর্তা কর্মচারীদের কষ্টের কথা বলতে চাই। 

    বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মিজানুর রহমান জানান, দেশে কিন্ডারগার্টেন স্কুল প্রায় ৪০ হাজার। প্রতিষ্ঠানগুলো চলে মূলত শিক্ষার্থীদের বেতন সহ ফি এর টাকায়। এখন শিক্ষকদের বেতন আর বাড়িভাড়া দিতে কষ্ট হচ্ছে।

    শিক্ষক সমাজ আমাদের সমাজ কে দিচ্ছে অনেক কিন্তু আজ এই পরিস্থিতিতে তারা আছে মহা বিপদে। জীবন যাপন করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। শিক্ষকরা সমাজের একটা সম্মানিত জায়গায় অবস্থান করে সুধু শিক্ষক নয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রতিষ্ঠানে মালিকগন সবাই বিপদে। গত সময়ে সকল প্রতিষ্ঠান খুললেও কেবলমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল।করোনা কালিন সময়ে সাংবাদিকরা প্রণোদনা পাচ্ছে যারা সরকারের সমালোচনা করে তারাও।সরকারের এই মহৎ উদারতায় আমরা মুগ্ধ । আমরা জানি শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড আর এই দণ্ড কে সঠিক করার কাজে নিয়োজিত শিক্ষক সমাজের জন্য প্রণোদনা ঘোষণা করা দরকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অসহায় শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট দের বাঁচান। শিক্ষক সমাজ তাদের কষ্টের কথা বলতেও পারেন না তারা নিরবে অশ্রু শুকায় চোখে আর হয়তো স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করে করোনা মুক্ত পৃথিবীর জন্য।

    ]]>
    https://bgn24.com/?feed=rss2&p=1119 0
    ম তে মহান মে, ম তে মুনিয়া আমাদের চিন্তা পরিষ্কার করতে হবে।। https://bgn24.com/?p=1067 https://bgn24.com/?p=1067#respond Sat, 01 May 2021 04:38:11 +0000 https://bgn24.com/?p=1067 ম তে মহান মে মতে মুনিয়া আমাদের চিন্তা পরিস্কার করতে হবে। একবার ভাবুন তো একজন মৃত কিশোরীকে নিয়ে ট্রল করে যা তা বলে অপবাদ দিয়ে যাচ্ছে সবাই। হোক জীবিত বা মৃত। আজকে সে কোন শিল্পপতির প্রেমে না পড়ে, গরীব মটর মেকানিকের প্রেমে পড়লে আপনারা বলতেন প্রেম অন্ধ প্রেম বয়স, সৌন্দর্য, বিত্ত কিচ্ছু দেখে না। কিন্তু এই যে, শিল্পপতি, তাই সে প্রেমে পড়ে নাই, ফেসে যায় নাই, লোভে পড়েছে।কিন্তু প্রেম এখন ব্যার্থ তাইতো। একটা মানুষ নিছক নিয়তির কাছে হেরে গেছে। প্রেম তো অন্যায় হতে পারে না। আপনারা কথা বলছেন কেমন বাবা-মা সন্তান কে লেলিয়ে দিয়ে অর্থ নিচ্ছে ভোগ করছে। অথচ এই মেয়েটির পিতা প্র‍য়াত হয়েছেন ২০১৫ ইং সেপ্টেম্বর আর মা ২০১৮ইং সালে জুন মাসে। তাও অনেকদিন অসুস্থতায় ভোগে। এলাকায় যেয়ে খোঁজ নিয়ে দেখেন তার বাবার অনেক সুনাম আছে। তিনি ন্যাপ এর রাজনীতি করতেন। (প্র‍য়াত প্রফেসর মুজাফফর স্যার এর কুড়ে ঘর প্রতিকের দল) যারা একটু রাজনীতি বুঝেন তারা নিশ্চয়ই জানেন এই দল কেউ লোভে করে না।এটা লোভের রাজনীতির দল না। একটা ভিন্ন চিন্তা থেকেই মানুষ এই সব দল করে দেশ গঠনের লক্ষ্যে । তিনি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। মা ছিলেন প্রাক্তন সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা। কিন্তু আপনারা তাদের দোষ দিয়েই যাচ্ছেন। দিবেন না কেন? ক্লাস সিক্স পড়ুয়া বাচ্চা রেখে বাবা মারা যাবে কেন তাই না ? আর নাইন পড়ুয়া সুন্দরী মেয়ে রেখে মা কিভাবে মারা যায়? ইরেস্পন্সিবল।
    এই অপূর্নতা থেকে তার এসেছে স্বাধীনতা। আবার বলা যেতে পারে একটা চরম দুঃখ বোধ থেকে পৃথিবীকে অন্যভাবে দেখার একটা প্রত্যায় চলে এসেছে। কৈশোরে র বাবা মা- বাবার অনুপস্থিতি হয়তো তাকে একটু বেপরোয়া করেছে। প্রেম কি একমুখী ছিল একা একাই ভালোবেসে গেছে সে যেমন ঘটে তারকাদের সাথে তার ভক্তদের প্রেম এটা তো ঘটেনি । যতদুর জেনেছি বড়বোন অনেকটা অভিবাবক হিসেবে ছিলেন। কিন্তু আমাদের দেশে মেয়েরা নিজের সংসারের পাশে বোনকে কতটুকু সময় বা মনোযোগ দিতে পারে। পিতা মাতার ভূমিকা কি নিতে পারে? অনেক মেয়ে চাকরি ছাড়ে বাড়ন্ত ছেলে মেয়ে দেখে রাখতে হবে। স্কুলের কলেজের সামনে মায়েরা বসে থাকে। পাহারা। কিন্তু মেয়ে ঠিকই ডেটে চলে যায়। মা বাবা অসহায়ের মতো একে অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকে। আর মুনিয়ারা খারাপ হলে চরিত্রের দোষ।আমি আপনি সমাজ ব্যাবস্থা কি দায়ী না। একটি মেয়ের চরিত্র খারাপ হলে তো কোব না কোন ছেলের ও এর পিছনে ইনভলভ থাকে আমরা একই সমাজে থেকে কেন মেয়েটির দোষ দিবো। আরে একটু ভাবুন সেই ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে আপনার কথা। কত ভূল আর দূঃসাহসি কাজে ভরা। তখন কি দুষ্ট সহপাঠীর প্ররোচনায় সে একটু বেপোরোয়া হয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক? আপনার সন্তান হলে কি করতেন। পাড়া আর স্কুল বদল। মুনিয়াও ঢাকায় এসেছিল। কুমিল্লা ছেড়ে। সাথে ছিল মডেলিং করার স্বপ্ন। অবশ্য এটা ওতো দোষ। মিডিয়াতে খারাপ মেয়েরাই যায় এমন কথা সবাই বলে আর মিডিয়াতে থাকা ছেলে গুলো দুধে ধোঁয়া তুলসীগাছ বা পাতা তাই না। একটা মেয়ের নায়িকা হওয়ার শখ জাগতেই পারে আবার কাছের লোকেরা বন্ধু বান্ধব উৎসাহ দেয় তোর চেহারা ভালো ট্রাই কর।একটি মেয়ের কি স্বপ্ন থাকতে পারেনা। উঠতি মডেলদের নিয়ে কোন একটি অনুষ্ঠানে সেই শিল্পপতির সাথে তার দেখা। তখন কিন্তু এই চরিত্রের অনেকেরই নজরে এসেছিল মুনিয়া। এর মধ্যে বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পীর নামও শুনা যায়। শুনা যায়, সুন্দরী এই মেয়েকে পাওয়ার গোপন প্রতিযোগিতায় এই শিল্পপতির সাথে ক্ষমতায় টিকতে পারেনি কেউ।প্রতিযোগীদের আবার দোষ নেই সেহেতু মেয়েটির মিডিয়াতে শখ তাই সে তাদের তাই তো। ছোটকাল থেকে অপুর্নতাগুলো নিয়ে বেড়ে উঠতে গিয়ে তার মনের কোনে হয়তো বাসা বেধেছে একটা মানুষের স্বপ্ন যে তাকে আগলে রাখবে, যার দ্বারা সবকিছুই উপভোগ করা যায়। শুনাযায় একমাত্র বড়ভাই বাউন্ডুলে, রাজনীতি করে বেড়ায়। বোন সংসার নিয়ে ব্যাস্ত। প্রেমে পড়ে মুনিয়া। শিল্পপতির পরিবারে একটু জানাজানি হলে শিল্পপতি সাহেব গুলশানের সেই ফ্লাট মুনিয়ার বড় বোনের নামে ভাড়া নেয়। বড় বোন এবং বড় ভাইকে আশ্বস্ত করে যে, লেখাপড়া শেষে তাকে বিয়ে করে বিদেশে স্যাটেল করে দেব। কিন্তু সে যেহেতু বিবাহিত তাই কোন অবস্থাতে যেন তার বাবা টের না পান, জানাজানি হলে তিনি মুনিয়ার অনেক বড় ক্ষতি করতে পারেন। বর্তমানে যেহেতু মুনিয়াদের ভাই বোনদের মাঝে পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে মামলা চলছে, তাই এই সময়ে বিরাগ জনিত কারনে তার দিকে নজর না থাকা স্বাভাবিক।

    আর এই ইন্টামিডিয়েটের ঝুকিপূর্ণ বয়সে কোনরকম গাইডলাইন না থাকা মুনিয়া প্রেমের স্রোতে ভেসে যাওয়াও স্বাভাবিক। আচ্ছা না হয় আপনাদের মতো বললাম লোভে পড়েছে। কিন্তু উচ্চশিক্ষিত, বিবাহিত, দুই বাচ্চার বাবা, মধ্যবয়স্ক শিল্পপতি পুরুষটা কি কারণে ফেসেছে বলতে পারেন? ফাসে সে, মারা যায় মুনিয়া। বিভিন্ন পোস্ট থেকে যা জানলাম গত ২৩ শেএপ্রিল তারিখে সেই শিল্পপতি কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে এই ফ্লাটে ইফতারি করে এবং মুনিয়ার সাথে বেশ কিছু ঘনিষ্ঠ ছবি তোলে। এই ছবিগুলো কোন না কোন ভাবে ফেইসবুকে আপলোড হলে তিনি বিরুক্ত হয়। হবেই না কেন?মুনিয়া পাব্লিক্যালি জানান দিচ্ছে এই সম্পর্ক। শেষ পর্যন্ত ঘটনা মুনিয়ার লাশ পর্যন্ত গিয়ে দাঁড়ায়। পরিবারের আশংকা মেয়েকে খুন করে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। সেই ছোট বেলা থেকে পত্র-পত্রিকায় পড়ে যা শিখেছি দেখেছি, এইরকম শিল্পপতিদের পাল্লায় পরে কত শতশত উঠতি মডেল সুন্দরি মেয়ে লাশ হয়েছে মরে পড়ে ছিল, আছে, বুড়িগঙ্গার পিলারে তার কোন হিসেব নেই। সত্য কিংবা প্ল্যান্ট হতে পারে কিন্তু ফাঁস হওয়া ফোনালাপে তার, ভয়ে ভরা মিনতি, আপনি করে বয়ফ্রেন্ডকে সম্ভোধন করাটা, কি বলে না যে সে কতোটা অপরিপুর্ন। নিজের স্বার্থ হাসিলের পর মুনিয়াকে ৫০ লাখ টাকা চুরির অপবাদ, চরিত্রহীন ও পতিতার ট্যাগ দিয়ে মানসিক নির্যাতন ও মামলার ভয় দেখিয়ে সম্পর্ক বিচ্ছেদের চেষ্টা করা, এই শিল্পপতির কোন চরিত্র আপনাদের সামনে আসে? যারা মুনিয়ার চরিত্রের পোস্টমর্টেম করে লাশের বৈধতা দিচ্ছেন, আপনারা মনে মনে ভাবেন, আজকে পকেটে টাকা নেই বলে, পারলাম না। আর যাদের একটু বড় বেতন আর গাড়ি হয়েছে তারা যে বন্ধুর কাছে গোপনে ইনবক্সে এক্সট চান, আপনি কি? আপনিও একজন সেই পুরুষ যেএকটা মুনিয়া এক-দুই বছরের জন্য পেলে মন্দ না ভাবেন। শুধু হেডমে কুলায় না।

    শিল্পপতি সাহেব মুনিয়াকে করে রাখে আইসোলেটড। যাতে আপনি মুনিয়া পর্যন্ত আপনার মোহ ব্যাক্ত করতে না পারেন। অনেকে ট্রল করছে ভাত খেতে ভালো লাগে না। পাশাপাশি বিরিয়ানি লাগে। পড়ে কি ফিল হচ্ছে বললাম না। এই চল্লিশ/পয়তাল্লিশ বয়সে আপনাদের অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে। বেতন বড় ও ব্যাংক ব্যালেন্স হয়েছে। কলেজে স্কুলে পাচ বছর ঘুরেও একটা মেয়ে পাটাতে পারেননি। কিন্তু অই যে, অভিজ্ঞতা। এখন এই রকম ইন্টার ফাস্ট বা সেকেন্ড ইয়ারের অনেক বিরিয়ানি পাবেন যাদের গার্জিয়ান নাই। সুন্দর, একাকি, ক্যারিয়ারে হেন ত্যান করে ফেলবে স্বপ্ন দেখে। এদের পটানো, কাবু করা আপনাদের ইচ্ছা সময় মাত্র। ভয় নাই। কেউ আপনাদের খারাপও বলবে না। দোষ শুধু বিরিয়ানির। আমি শুধু ভাবি নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে, মরে গেলে আমাদের আজকের আদরের সন্তান টাও কি এমন কোন ট্রেপে পড়ে যাবে না তো। আল্লাহ শুধু ততদিন বাবাদের বাচাই রেখ।কারন এই শিল্পপতিদের তো মৃত্যু চাওয়া যায় না তারা হল ২য় ভগবান।আমি একটি মুনিয়ার কথা বলছি না এই সমাজে অজস্র মুনিয়ারা ঘোরে তাদের স্বপ্ন পুরন হয় না বিরিয়ানির লোভে ছুটে চলা বৃত্তবানেরা মুনিয়াদের স্বপ্ন হরন করে, হরন করে চরিত্র, তার দোষ ও মুনিয়াদের কেন না তারা মডেল হতে চাই । আজ মহান মে দিবস হয়তো পেটাই লোহার মত জন হেনরীদের আত্মার হাসে আর বাতাসে ঘোরে । ধনী গরীবের মারপ্যাচে এরা কি তাহলে বৃত্তবানদের বিনোদন শ্রমিক না?। আমি এই মে দিবসে তাদের স্বপ্ন পুরনের আধিকার চাই ।শোষকে শৃঙ্খলে শোষিতের কি মৃত্যু চলমান থাকবে। এরা মরবে ওরা প্লেনে চড়ে ঘুরবে। ১৮৮৬ থেকে ২০২১ শিকাগো থেকে ঢাকা, আজও শ্রমিক মরে ঘোরেনি ভাগ্যের চাকা।।

    বেদুইন হায়দার লিও

    ( বঙ্গবন্ধু গবেষক ও মিডিয়া শ্রমিক) (‘পোস্টমর্টেম’ শাহনাজ মুফতি এর পোস্ট থেকে অনুপ্রাণিত)

    ]]>
    https://bgn24.com/?feed=rss2&p=1067 0
    ইসলামের প্রচারে বঙ্গবন্ধু প্রেক্ষিত বাংলাদেশ https://bgn24.com/?p=793 https://bgn24.com/?p=793#respond Mon, 08 Feb 2021 13:17:13 +0000 http://bgn24.com/?p=793 বাংলাদেশে ইসলামের প্রচারে বঙ্গবন্ধু  কেবল মাত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য ভারতের সাথে আওয়ামী সখ্যতা এবং  আর ইসলামের সাথে বৈরিতা এই রটনা রটিয়ে ইসলামের জন্য বঙ্গবন্ধুর অবদানকে ছোট করার চেষ্টা চলছে। মূলত ৭৫ পরবর্তী সময় গুলোতে নানা অপপ্রচার গুলির মধ্যে এটিও ছিল।

    ইতিহাস দেখলে  দেখা যায়, হযরত শাহজালাল, হযরত শাহ পরান, হযরত খান জাহান আলীসহ যারাই এদেশে ইসলামের প্রচারে সকলেই এসেছেন বাগদাদ, ইয়েমেন, খুরাসান কিংবা আরবীয় কোন না কোন দেশ থেকে। বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস দেখলে জানা যায়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পূর্ব পুরুষগণও এদেশে ইসলাম প্রচারের কাজে আগমন করেন। বংশ পরম্পরায় শেখ লুৎফর রহমনের  ও সায়েরা খাতুনের ঘরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ  করেন। আমরা জেনেছি  বঙ্গবন্ধুর  বাবা-মা দুজনেই ছিলেন অত্যন্ত ধার্মিক ও সূফীবাদে বিশ্বাসী ছিলেন।

    জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শিশুকাল থেকেই বঙ্গবন্ধু ছিলেন ধার্মিক। বঙ্গবন্ধু  সর্বজন শ্রদ্ধেয় মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশ সাহেবের নেতৃত্বে মাদরাসা শিক্ষকদের সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের মাদরাসা শিক্ষক ও আলেম-ওলামাদের সম্মেলনে ১৯৭৩ সালে প্রধান অতিথি হিসেবে ঢাকা আলীয়া মাদরাসা মাঠে অংশ গ্রহণ করে এ দেশে মাদরাসা শিক্ষা উন্নয়নে নীতি নির্ধারণী নির্দেশনা দিয়ে মাদরাসা শিক্ষার দ্বার উন্মুক্ত করেছিলেন।

    তৎকালীন প্রবীণ  রাজনীতিবিদ মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশকে বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়ে স্বায়ত্তশাসিত  মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের যাত্রা শুরু করেছিলেন। ইসলাম চর্চা ও গবেষণার জন্য বঙ্গবন্ধু  আন্তরিক উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায় বায়তুল মোকাররম মসজিদ নিয়ে ১৯৭৫ সালের ২৮ মার্চ এক অধ্যাদেশ বলে ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন এবং একজন প্রখ্যাত আলেমেদ্বীন ও ইসলামিক স্কলার, মেশকাত শরীফের বাংলা অনুবাদক মাওলানা ফজলুল করিমকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রথম মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেন।

    বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক হিসেবে দুইজন আলেমকে নিয়োগ দিয়ে তিনি আলেমদের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা ও আস্থার পরিচয় দিয়েছিলন। তিনি ১৯৭০ সালের নির্বাচনের প্রাক্কালে বেতার ভাষণে বলেছিলেন, ‘আমরা বিশ্বাসী ইসলামের বিশ্বাসে, আমাদের ইসলাম হযরত রাসূলে কারিম (সাঃ) এর ইসলাম, যে ইসলাম শিক্ষা দিয়েছে ন্যায় ও সুবিচারের অনেক মন্ত্র। ইসলামের প্রবক্তা সেজে পাকিস্তানের মাটিতে বারবার যারা অন্যায়, অত্যাচার, শোষণ, বঞ্চনার পৃষ্ঠপোষকতা করেছে, আমাদের সংগ্রাম সেই মুনাফিকদের বিরুদ্ধে। দেশের শতকরা ৯৫ জন মুসলমান সে দেশে ইসলাম বিরোধী আইন পাসের ভাবনা ভাবতে পারে তারাই, ইসলামকে যারা ব্যবহার করে দুনিয়াকে শায়েস্তা করার জন্য।’

    ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারী  পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের মুক্ত বাতাসে এসে ঢাকা সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে বিশাল এক জনসভায় তিনি বলেছিলেন, ‘আমার ফাঁসির হুকুম হয়েছিল, জীবন দেয়ার জন্য প্রস্তুত হয়েছিলাম। আমি বলেছিলাম, তোমরা আমাকে মারতে চাও, মেরে ফেলো। আমি বাঙ্গালী, আমি মানুষ, আমি মুসলমান।

    মুসলমান একবার মরে বারবার মরে না।       মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে তিনি বাংলাদেশে ইসলামের প্রসারের জন্য তিনি যে কত উদ্দামী তার প্রমান স্বরূপ  আজকে বাংলাদেশে প্রায় ১০ হাজার দাখিল, আলিম, ফাযিল, কামিল মাদরাসা ও ১৭ হাজার ইবতেদায়ী মাদরাসা প্রতিষ্ঠা হয়েছে। এর ফলে মাদরাসা শিক্ষক-কর্মচারীগণ দেশ ও ইসলামের সেবার সাথে সাথে সমাজ উন্নয়ন, জঙ্গিবাদসহ সকল অনৈতিক কাজ থেকে দেশের মানুষকে বিরত থাকার মত কাজটিই করার সুযোগ পাচ্ছেন।

    ইসলামিক ফাউন্ডেশন  আজ দেশীয় অর্থে পরিচালিত একটি সংস্থা। এর মাধ্যমে কুরআনের বাংলা তরজমা, তাফসির, হাদিস গ্রন্থের অনুবাদ, রাসূল (সা.) এর জীবন ও কর্মের উপর রচিত ও অনূদিত বই পুস্তক, ইসলামের ইতিহাস, ইসলামি আইন ও দর্শন, অর্থনীতি, সমাজনীতি, সাহাবী ও মনীষিদের জীবনী ইত্যাদি নানা বিষয়ে হাজার হাজার বই পুস্তক প্রকাশ, ৬৪ জেলা কার্যালয় ২৮টি ইসলামিক মিশন, ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, মসজিদভিত্তিক মক্তব, মসজিদ পাঠাগারসহ নানাবিধ কাজের মাধ্যেমে ইসলামের মহান সেবা দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন।
    বঙ্গবন্ধু  সদ্য স্বাধীন দেশের নাগরিকদের অনৈতিক কাজ থেকে বিরত রাখার জন্য ও সুন্দর একটি ইসলামি পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে মদ, জুয়া, হাউজি ও ঘোড়ার দৌড় নিষিদ্ধ করেন। বঙ্গবন্ধু মহানবী (সা.) এর শিক্ষায় অনুপ্রাণীত হয়ে এসব বন্ধ করে রেসকোর্স ময়দানে অনৈসলামিক কর্মকান্ড বন্ধ করে সে যায়গায় ফলবৃক্ষ রোপণ করেন এবং রেসকোর্স ময়দানের নাম রাখেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান।
    বিশ্ব মুসলিমদের ঐক্যবদ্ধ, ইসলাম প্রচার ও প্রসারের সুবিধার্থে বিশেষ করে ইসলামের পথে দাওয়াতি কার্যক্রমের সুবিধার্থে ঢাকার অদূরে টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠানের জন্য সুবিশাল জায়গা বরাদ্দ করেন। তাবলিগ জামাতের কেন্দ্রীয় দপ্তর হিসেবে পরিচিত কাকরাইল মসজিদ সম্প্রসারণ এবং মসজিদের জায়গা বরাদ্দ দেন। বঙ্গবন্ধুই প্রথম কমিউনিস্ট দেশ হিসেবে পরিচিত সোভিয়েত ইউনিয়নে ইসলাম প্রচারে তাবলীগ জামায়াত প্রেরণের ব্যবস্থা করেন।

    বঙ্গবন্ধুর নির্দেশেই প্রথম বেতার ও টিভিতে কুরআন তিলাওয়াত ও কুরআনের তাফসির করা শুরু হয়, যা এখনও চালু রয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশসহ সারা দুনিয়ার মুসলমানগণ পবিত্র কুরআনের মহিমায় মহিমান্বিত হচ্ছেন।
    ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.), শব-ই-বরাত ও শব-ই-কদর উপলক্ষে সরকারি ছুটি: আমরা মুসলমান হিসেবে, হুজুর (সা.) এর খাঁটি অনুসারী হিসেবে বিশ্বাস করি, হুজুরে পাক (সা.) এর মিলাদ পালন করা অবশ্যই নেকের কাজ।                                                 কিন্তু সরকারিভাবে এই মহাপবিত্র দিবসটি উদযাপনের জন্য সর্বপ্রথম বঙ্গবন্ধুই ব্যবস্থা করেন। এবং ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.), শব-ই-বরাত, শব-ই-কদরে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন এবং এই সকল পবিত্র দিনে সিনেমা হল বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেন। শুধু তাই নয়, বঙ্গবন্ধু নিজে ১৯৭৩ ও ১৯৭৪ সালে বায়তুল মোকাররাম চত্ত¡রে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) অনুষ্ঠানে সরকার প্রধান হিসেবে উপস্থিত থেকে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদ্যাপন করে নবীপ্রেমিক হিসেবে নিজেকে প্রমাণিত করেন।

    সদ্য স্বাধীন দেশের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুই প্রথম ইসলামের পবিত্র ইবাদাত হজ্জ পালনের জন্য ব্যবস্থা করেন এবং হজ্জযাত্রীদের জন্য সরকারি তহবিল থেকে অনুদানের ব্যবস্থা করেন।  বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালে মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন ও সুসম্পর্ক গড়ে তোলার লক্ষ্যে পাকিস্তানের লাহোরে অনুষ্ঠিত ইসলামি সম্মেলন সংস্থার (ওআইসি) সভায় যোগদান করে আনুষ্ঠানিকভাবে এই সংস্থার সদস্য পদ গ্রহণ করেন এবং এই সম্মেলনের মাধ্যমে মুসলিম বিশ্বের সাথে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং উক্ত সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু যে ভাষণ দিয়েছিলেন তাতে মুসলিম বিশ্বের নেতাদের সাথে সুদৃঢ় ভ্রাতৃত্ব গড়ে উঠে।   বঙ্গবন্ধু কখনো ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যারহার করেন নি। বরং আওয়ামী মুসলিম লীগের  বদলে আওয়ামী লীগ করেছন। তিনি বিস্বাস করতেন “লা কুম দিনুকুম অলিয়ার দীন”। আজও এদেশের মানুষ এই মহানায়ক কে অপপ্রচারের বেড়াজালে বন্দী করে রেখেছে। তবে ইতিহাস এমন এক সত্যি তা কালের বিবর্তনে বেরিয়ে আসবে।

    ইসলাম এক সত্যি আর তার প্রচারে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যে পদক্ষেপ নিয়ে ছিলেন তা প্রকাশিত হবেই।

     

    বেদুইন হায়দার লিও ,(বঙ্গবন্ধু গবেষক ও সাংস্কৃতিক কর্মী)

    ]]>
    https://bgn24.com/?feed=rss2&p=793 0
    বাংলার মানুষ শান্তি চাই! https://bgn24.com/?p=420 https://bgn24.com/?p=420#respond Sat, 16 Jan 2021 06:54:33 +0000 http://bgn24.com/?p=420

     

    • বিখ্যাত কবিতা “ওরা প্রথমতঃ এসেছিল” (ইংরেজি: First they came …) (ফ্রিডরিখ গুস্তাফ এমিল মার্টিন নিম্যোলারবা মার্টিন নিম্যোলার (জার্মান: Friedrich Gustav Emil Martin Niemöller জন্ম:১৮৯২ – মৃত্যু: ১৯৮৪) কবিতাটি বিশ্বের সর্বত্র জনপ্রিয়। কবিতাটির প্রথম কয়েক লাইন এ রকম :
      #যখন ওরা প্রথমে কমিউনিস্টদের জন্য এসেছিল, আমি কোনো কথা বলিনি,
      কারণ আমি কমিউনিস্ট নই।
      তারপর যখন ওরা ট্রেড ইউনিয়নের লোকগুলোকে ধরে নিয়ে গেল, আমি নীরব ছিলাম,
      কারণ আমি শ্রমিক নই।
      তারপর ওরা যখন ফিরে এলো ইহুদিদের গ্যাস চেম্বারে ভরে মারতে,আমি তখনও চুপ করে ছিলাম,
      কারণ আমি ইহুদি নই।
      আবারও আসল ওরা ক্যাথলিকদের ধরে নিয়ে যেতে,আমি টুঁ শব্দটিও উচ্চারণ করিনি,
      কারণ আমি ক্যাথলিক নই।
      শেষবার ওরা ফিরে এলো আমাকে ধরে নিয়ে যেতে,
      আমার পক্ষে কেউ কোন কথা বলল না, কারণ, কথা বলার মত তখন আর কেউ বেঁচে ছিল না।৷ পাঠ্যপুস্তক থেকে হুমায়ুন আজাদের গল্প অপসারণ বা পরিমার্জন করে মুলতো তারা তাদের সাম্প্রদায়িক শক্তির জানান দিচ্ছিলো।অসাম্প্রদায়িক মানুষ তাই শঙ্কা করে আর বঙ্গবন্ধুর কাছে ক্ষমা চাই হে পিতা হে নেতা। তোমার দেশে তোমার চলে যাবার মাত্র ৪৫ বছরে দাবি উঠলো ” জন্ম শতবার্ষিকীতে বঙ্গবন্ধুর পাওয়া সেরা উপহার, দেশের জন্য জীবন দিয়ে এটাই ছিল পাওনা ৷ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই বলেছেন, ‘ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপনের চক্রান্ত তৌহিদি জনতা রুখে দেবে। রাষ্ট্রের টাকা খরচ করে মূর্তি স্থাপনের অপরিণামদর্শি সিদ্ধান্ত থেকে সরকারকে ফিরে আসতে হবে।’
      শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) জুমার নামাজের পর রাজধানীর ধোলাইপাড়ে ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপনের পরিবর্তে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রূহের মাগফিরাত কামনায় আল্লাহর ৯৯ নাম অঙ্কিত স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপনের দাবিতে তৌহিদি জনতা ঐক্য পরিষদ আয়োজিত সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশটি ধূপখোলা মাঠে অনুষ্ঠিত হয়।
      মুফতি ফয়জুল করীম আরও বলেন, ‘মূর্তি স্থাপনের সিদ্ধান্ত বাতিল না হওয়া পর্যন্ত তৌহিদি জনতার আন্দোলন চলবে। সরকার যদি ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপন থেকে সরে না আসে, তাহলে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো। আমি  চিৎকার করে কাঁদিতে চাহিয়া করিতে পারিনি চিৎকার। একটি স্বাধীন রাস্ট্রের জন্য এটা হুমকি সরুপ। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী, ইতিহাসের রাখাল রাজা মহান বাঙালী জাতির স্থপতি , জুলিও কুরি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান কে নিয়ে এই কথাটা বলে ঠিক করেন নি।তিনি বাঙালীর নেতা এখানে বসবাস করে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, ওরাও, সওতাম, চাকমা, মুরাং, রাখাইন সহ সকল নৃগোষ্ঠীর নেতাও তিনি। উনার ভাস্কর্য তাই হতেই পারে ওটা নিয়ে আন্দোলন না করলেও হত।যদি অন্য ধর্মের কারো মনে হল তার ভাস্কর্য বানাবে।ইসলাম তো বলে “লা কুম দিনু কুম ওলিয়ার দীন” মানে যার যার ধর্ম তারতার কাছে। এই ঘটনাটি আমাদের দেশ কে একটি সাম্প্রদায়িক রাস্ট্রের দিকে নিয়ে যাবে।একটি গনতান্ত্রিক রাস্ট্রে  মানুষ যে কোন দাবি (যৌক্তিক) তুলতেও পারে তবে এগুলো ভেবে বুঝে করতে হবে । প্রশ্ন থাকতেই পারে আগে দরকার বিশুদ্ধ ইসলাম। বাংলাদেশ আহলে হাদিস আন্দোলন বলছে পীরের মুরিদ হওয়ার দরকার নাই। নবী মোহাম্মদ (সাঃ) ই একমাত্র সাফায়েত কারী। মুসলমানদের জন্য বড় কোন পীর নাই দরকার নাই। আমরা কি তাহলে চরমনায় পীর সাহেবদের বলব আপনারা পথ হারিয়েছেন চলে আসেন ইসলামের ছায়া তলে। পীর মানা যারা নিষেধ করেন তারাও মুসলিম স্কলার। দেওয়ান বাগি যখন বলতেন আজেবাজে কথা তখন আপনারা কই থাকতেন।১৯৭৫ পরবর্তী সময়ে এদেশ থেকে বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস মুছে ফেলতে যারা চেয়েছিল জানিনা সেই মুসলিম লীগের দোষর কিনা তারা। যে অসাম্প্রদায়িক চিন্তাধারা থেকে মহান সংবিধান (১৯৭২) রচনা করে একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনা থেকে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। এটা কি তার কফিনে ১ম পেরেক কিনা বলা মুসকিল। বঙ্গবন্ধুর দল ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় এটা হলে এই দাবি উঠলে তার শততম জন্মদিনের একটা ভালো উপহার হলে যা বঙ্গবন্ধুর কোন কালেই প্রাপ্তি ছিল না । যারা এমন দাবি করেছেন তাদের আগামীতে রাস্ট্রীয় সম্মান প্রদান করে মদিনা সনদের ভিত্তিতে দেশ চালানোর জন্য একধাপ এগিয়ে নিতে সংশিষ্টদেরকে ধন্যবাদ।। তবে স্বাধীন বাংলায় বঙ্গবন্ধুর অনুসারীর সংখ্যা কম নয়। হয়তো তাকে জীবত রক্ষা করা যায়নি তবে তার আদর্শ রক্ষার সৈনিক এর কিন্তু অভাব নেই। দিন শেষে সকলের বোধহয় হোক আমরা হানাহানী চাইনা। বঙ্গবন্ধুর ভাষায় ” বাংলার মানুষ শান্তি চাই “।

     

    লেখকঃ বেদুইন হায়দার লিও (বঙ্গবন্ধু গবেষক ও সাংস্কৃতি কর্মি)

    ]]>
    https://bgn24.com/?feed=rss2&p=420 0