বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস তার রাষ্ট্র সংস্কার কার্যক্রম এগিয়ে নিতে সংস্কারের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে নির্বাচন, পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, জনপ্রশাসন ও সংবিধান সংস্কারে কমিশন গঠন করার ঘোষণা দিয়েছেন । ছয়জন বিশিষ্ট নাগরিককে এই খাতের সংস্কার কমিশনের প্রধান করার ঘোষণাও দেন তিনি। বুধবার সন্ধ্যায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা দায়িত্ব নেওয়ার একমাস পূর্তিতে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে বলেছেন, চলতি মাসে পূর্ণাঙ্গ কমিশন গঠিত হওয়ার পর কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে তার কাজ ১ অক্টোবর থেকে শুরু করতে পারবে এবং পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে।
”কমিশনের প্রতিবেদনের ভিত্তিকে সরকার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে পরামর্শ সভা করে সংস্কার ভাবনার রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে। এতে এই রূপরেখা কীভাবে বাস্তবায়ন হবে তার একটি ধারণাও দেওয়া হবে।”
কমিশনের প্রধান হলেন যারাঃ
১। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে নাগরিক সংগঠন সুশাসনের জন্য নাগরিক -সুজন এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।
২। পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে সাবেক স্বরাষ্ট্র ও সংস্থাপন সচিব সফর রাজ হোসেন।
৩। বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান ।
৪। দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কারের প্রধান হিসেবে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান ।
৫। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের চেয়ারম্যান ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী ।
৬। সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে আইনজীবী শাহদীন মালিককে দায়িত্ব দেওয়ার কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা।
৩৩ মিনিটের ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশে ফ্যাসিজম বা স্বৈরতান্ত্রিক শাসন পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা রোধ এবং জনমালিকানা ভিত্তিক, কল্যাণমুখী ও জনস্বার্থে নিবেদিত একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রবর্তনের লক্ষ্যে কিছু জাতীয়ভিত্তিক সংস্কার সম্পন্ন করা জরুরি হয়ে পড়েছে। এ সংস্কার ভাবনার অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা।”আমরা যেহেতু জনগণের ভোটাধিকার ও জনগণের মালিকানায় বিশ্বাস করি, সেহেতু নির্বাচন ব্যবস্থার উন্নয়নে আমাদের সংস্কার ভাবনায় গুরুত্ব পেয়েছে। আমরা মনে করি নির্বাচনের নামে সংখ্যাগরিষ্ঠতার একাধিপত্য ও দুঃশাসন মানুষের ওপর চাপিয়ে দেয়া বা এর মাধ্যমে এক ব্যক্তি বা পরিবার বা কোনো গোষ্ঠীর কাছে সকল ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়। এসব আশঙ্কা রোধ করার জন্য নির্বাচনের সাথে সম্পর্কিত নির্বাচন কমিশনসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কারের কথা আমরা ভাবেছি।