শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:০৫ পূর্বাহ্ন

ম তে মহান মে, ম তে মুনিয়া আমাদের চিন্তা পরিষ্কার করতে হবে।।

বেদুইন হায়দার লিও / ৮২৬ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : শনিবার, ১ মে, ২০২১

ম তে মহান মে মতে মুনিয়া আমাদের চিন্তা পরিস্কার করতে হবে। একবার ভাবুন তো একজন মৃত কিশোরীকে নিয়ে ট্রল করে যা তা বলে অপবাদ দিয়ে যাচ্ছে সবাই। হোক জীবিত বা মৃত। আজকে সে কোন শিল্পপতির প্রেমে না পড়ে, গরীব মটর মেকানিকের প্রেমে পড়লে আপনারা বলতেন প্রেম অন্ধ প্রেম বয়স, সৌন্দর্য, বিত্ত কিচ্ছু দেখে না। কিন্তু এই যে, শিল্পপতি, তাই সে প্রেমে পড়ে নাই, ফেসে যায় নাই, লোভে পড়েছে।কিন্তু প্রেম এখন ব্যার্থ তাইতো। একটা মানুষ নিছক নিয়তির কাছে হেরে গেছে। প্রেম তো অন্যায় হতে পারে না। আপনারা কথা বলছেন কেমন বাবা-মা সন্তান কে লেলিয়ে দিয়ে অর্থ নিচ্ছে ভোগ করছে। অথচ এই মেয়েটির পিতা প্র‍য়াত হয়েছেন ২০১৫ ইং সেপ্টেম্বর আর মা ২০১৮ইং সালে জুন মাসে। তাও অনেকদিন অসুস্থতায় ভোগে। এলাকায় যেয়ে খোঁজ নিয়ে দেখেন তার বাবার অনেক সুনাম আছে। তিনি ন্যাপ এর রাজনীতি করতেন। (প্র‍য়াত প্রফেসর মুজাফফর স্যার এর কুড়ে ঘর প্রতিকের দল) যারা একটু রাজনীতি বুঝেন তারা নিশ্চয়ই জানেন এই দল কেউ লোভে করে না।এটা লোভের রাজনীতির দল না। একটা ভিন্ন চিন্তা থেকেই মানুষ এই সব দল করে দেশ গঠনের লক্ষ্যে । তিনি ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। মা ছিলেন প্রাক্তন সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা। কিন্তু আপনারা তাদের দোষ দিয়েই যাচ্ছেন। দিবেন না কেন? ক্লাস সিক্স পড়ুয়া বাচ্চা রেখে বাবা মারা যাবে কেন তাই না ? আর নাইন পড়ুয়া সুন্দরী মেয়ে রেখে মা কিভাবে মারা যায়? ইরেস্পন্সিবল।
এই অপূর্নতা থেকে তার এসেছে স্বাধীনতা। আবার বলা যেতে পারে একটা চরম দুঃখ বোধ থেকে পৃথিবীকে অন্যভাবে দেখার একটা প্রত্যায় চলে এসেছে। কৈশোরে র বাবা মা- বাবার অনুপস্থিতি হয়তো তাকে একটু বেপরোয়া করেছে। প্রেম কি একমুখী ছিল একা একাই ভালোবেসে গেছে সে যেমন ঘটে তারকাদের সাথে তার ভক্তদের প্রেম এটা তো ঘটেনি । যতদুর জেনেছি বড়বোন অনেকটা অভিবাবক হিসেবে ছিলেন। কিন্তু আমাদের দেশে মেয়েরা নিজের সংসারের পাশে বোনকে কতটুকু সময় বা মনোযোগ দিতে পারে। পিতা মাতার ভূমিকা কি নিতে পারে? অনেক মেয়ে চাকরি ছাড়ে বাড়ন্ত ছেলে মেয়ে দেখে রাখতে হবে। স্কুলের কলেজের সামনে মায়েরা বসে থাকে। পাহারা। কিন্তু মেয়ে ঠিকই ডেটে চলে যায়। মা বাবা অসহায়ের মতো একে অন্যের দিকে তাকিয়ে থাকে। আর মুনিয়ারা খারাপ হলে চরিত্রের দোষ।আমি আপনি সমাজ ব্যাবস্থা কি দায়ী না। একটি মেয়ের চরিত্র খারাপ হলে তো কোব না কোন ছেলের ও এর পিছনে ইনভলভ থাকে আমরা একই সমাজে থেকে কেন মেয়েটির দোষ দিবো। আরে একটু ভাবুন সেই ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে আপনার কথা। কত ভূল আর দূঃসাহসি কাজে ভরা। তখন কি দুষ্ট সহপাঠীর প্ররোচনায় সে একটু বেপোরোয়া হয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক? আপনার সন্তান হলে কি করতেন। পাড়া আর স্কুল বদল। মুনিয়াও ঢাকায় এসেছিল। কুমিল্লা ছেড়ে। সাথে ছিল মডেলিং করার স্বপ্ন। অবশ্য এটা ওতো দোষ। মিডিয়াতে খারাপ মেয়েরাই যায় এমন কথা সবাই বলে আর মিডিয়াতে থাকা ছেলে গুলো দুধে ধোঁয়া তুলসীগাছ বা পাতা তাই না। একটা মেয়ের নায়িকা হওয়ার শখ জাগতেই পারে আবার কাছের লোকেরা বন্ধু বান্ধব উৎসাহ দেয় তোর চেহারা ভালো ট্রাই কর।একটি মেয়ের কি স্বপ্ন থাকতে পারেনা। উঠতি মডেলদের নিয়ে কোন একটি অনুষ্ঠানে সেই শিল্পপতির সাথে তার দেখা। তখন কিন্তু এই চরিত্রের অনেকেরই নজরে এসেছিল মুনিয়া। এর মধ্যে বিখ্যাত সঙ্গীত শিল্পীর নামও শুনা যায়। শুনা যায়, সুন্দরী এই মেয়েকে পাওয়ার গোপন প্রতিযোগিতায় এই শিল্পপতির সাথে ক্ষমতায় টিকতে পারেনি কেউ।প্রতিযোগীদের আবার দোষ নেই সেহেতু মেয়েটির মিডিয়াতে শখ তাই সে তাদের তাই তো। ছোটকাল থেকে অপুর্নতাগুলো নিয়ে বেড়ে উঠতে গিয়ে তার মনের কোনে হয়তো বাসা বেধেছে একটা মানুষের স্বপ্ন যে তাকে আগলে রাখবে, যার দ্বারা সবকিছুই উপভোগ করা যায়। শুনাযায় একমাত্র বড়ভাই বাউন্ডুলে, রাজনীতি করে বেড়ায়। বোন সংসার নিয়ে ব্যাস্ত। প্রেমে পড়ে মুনিয়া। শিল্পপতির পরিবারে একটু জানাজানি হলে শিল্পপতি সাহেব গুলশানের সেই ফ্লাট মুনিয়ার বড় বোনের নামে ভাড়া নেয়। বড় বোন এবং বড় ভাইকে আশ্বস্ত করে যে, লেখাপড়া শেষে তাকে বিয়ে করে বিদেশে স্যাটেল করে দেব। কিন্তু সে যেহেতু বিবাহিত তাই কোন অবস্থাতে যেন তার বাবা টের না পান, জানাজানি হলে তিনি মুনিয়ার অনেক বড় ক্ষতি করতে পারেন। বর্তমানে যেহেতু মুনিয়াদের ভাই বোনদের মাঝে পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে মামলা চলছে, তাই এই সময়ে বিরাগ জনিত কারনে তার দিকে নজর না থাকা স্বাভাবিক।

আর এই ইন্টামিডিয়েটের ঝুকিপূর্ণ বয়সে কোনরকম গাইডলাইন না থাকা মুনিয়া প্রেমের স্রোতে ভেসে যাওয়াও স্বাভাবিক। আচ্ছা না হয় আপনাদের মতো বললাম লোভে পড়েছে। কিন্তু উচ্চশিক্ষিত, বিবাহিত, দুই বাচ্চার বাবা, মধ্যবয়স্ক শিল্পপতি পুরুষটা কি কারণে ফেসেছে বলতে পারেন? ফাসে সে, মারা যায় মুনিয়া। বিভিন্ন পোস্ট থেকে যা জানলাম গত ২৩ শেএপ্রিল তারিখে সেই শিল্পপতি কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে এই ফ্লাটে ইফতারি করে এবং মুনিয়ার সাথে বেশ কিছু ঘনিষ্ঠ ছবি তোলে। এই ছবিগুলো কোন না কোন ভাবে ফেইসবুকে আপলোড হলে তিনি বিরুক্ত হয়। হবেই না কেন?মুনিয়া পাব্লিক্যালি জানান দিচ্ছে এই সম্পর্ক। শেষ পর্যন্ত ঘটনা মুনিয়ার লাশ পর্যন্ত গিয়ে দাঁড়ায়। পরিবারের আশংকা মেয়েকে খুন করে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। সেই ছোট বেলা থেকে পত্র-পত্রিকায় পড়ে যা শিখেছি দেখেছি, এইরকম শিল্পপতিদের পাল্লায় পরে কত শতশত উঠতি মডেল সুন্দরি মেয়ে লাশ হয়েছে মরে পড়ে ছিল, আছে, বুড়িগঙ্গার পিলারে তার কোন হিসেব নেই। সত্য কিংবা প্ল্যান্ট হতে পারে কিন্তু ফাঁস হওয়া ফোনালাপে তার, ভয়ে ভরা মিনতি, আপনি করে বয়ফ্রেন্ডকে সম্ভোধন করাটা, কি বলে না যে সে কতোটা অপরিপুর্ন। নিজের স্বার্থ হাসিলের পর মুনিয়াকে ৫০ লাখ টাকা চুরির অপবাদ, চরিত্রহীন ও পতিতার ট্যাগ দিয়ে মানসিক নির্যাতন ও মামলার ভয় দেখিয়ে সম্পর্ক বিচ্ছেদের চেষ্টা করা, এই শিল্পপতির কোন চরিত্র আপনাদের সামনে আসে? যারা মুনিয়ার চরিত্রের পোস্টমর্টেম করে লাশের বৈধতা দিচ্ছেন, আপনারা মনে মনে ভাবেন, আজকে পকেটে টাকা নেই বলে, পারলাম না। আর যাদের একটু বড় বেতন আর গাড়ি হয়েছে তারা যে বন্ধুর কাছে গোপনে ইনবক্সে এক্সট চান, আপনি কি? আপনিও একজন সেই পুরুষ যেএকটা মুনিয়া এক-দুই বছরের জন্য পেলে মন্দ না ভাবেন। শুধু হেডমে কুলায় না।

শিল্পপতি সাহেব মুনিয়াকে করে রাখে আইসোলেটড। যাতে আপনি মুনিয়া পর্যন্ত আপনার মোহ ব্যাক্ত করতে না পারেন। অনেকে ট্রল করছে ভাত খেতে ভালো লাগে না। পাশাপাশি বিরিয়ানি লাগে। পড়ে কি ফিল হচ্ছে বললাম না। এই চল্লিশ/পয়তাল্লিশ বয়সে আপনাদের অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে। বেতন বড় ও ব্যাংক ব্যালেন্স হয়েছে। কলেজে স্কুলে পাচ বছর ঘুরেও একটা মেয়ে পাটাতে পারেননি। কিন্তু অই যে, অভিজ্ঞতা। এখন এই রকম ইন্টার ফাস্ট বা সেকেন্ড ইয়ারের অনেক বিরিয়ানি পাবেন যাদের গার্জিয়ান নাই। সুন্দর, একাকি, ক্যারিয়ারে হেন ত্যান করে ফেলবে স্বপ্ন দেখে। এদের পটানো, কাবু করা আপনাদের ইচ্ছা সময় মাত্র। ভয় নাই। কেউ আপনাদের খারাপও বলবে না। দোষ শুধু বিরিয়ানির। আমি শুধু ভাবি নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে, মরে গেলে আমাদের আজকের আদরের সন্তান টাও কি এমন কোন ট্রেপে পড়ে যাবে না তো। আল্লাহ শুধু ততদিন বাবাদের বাচাই রেখ।কারন এই শিল্পপতিদের তো মৃত্যু চাওয়া যায় না তারা হল ২য় ভগবান।আমি একটি মুনিয়ার কথা বলছি না এই সমাজে অজস্র মুনিয়ারা ঘোরে তাদের স্বপ্ন পুরন হয় না বিরিয়ানির লোভে ছুটে চলা বৃত্তবানেরা মুনিয়াদের স্বপ্ন হরন করে, হরন করে চরিত্র, তার দোষ ও মুনিয়াদের কেন না তারা মডেল হতে চাই । আজ মহান মে দিবস হয়তো পেটাই লোহার মত জন হেনরীদের আত্মার হাসে আর বাতাসে ঘোরে । ধনী গরীবের মারপ্যাচে এরা কি তাহলে বৃত্তবানদের বিনোদন শ্রমিক না?। আমি এই মে দিবসে তাদের স্বপ্ন পুরনের আধিকার চাই ।শোষকে শৃঙ্খলে শোষিতের কি মৃত্যু চলমান থাকবে। এরা মরবে ওরা প্লেনে চড়ে ঘুরবে। ১৮৮৬ থেকে ২০২১ শিকাগো থেকে ঢাকা, আজও শ্রমিক মরে ঘোরেনি ভাগ্যের চাকা।।

বেদুইন হায়দার লিও

( বঙ্গবন্ধু গবেষক ও মিডিয়া শ্রমিক) (‘পোস্টমর্টেম’ শাহনাজ মুফতি এর পোস্ট থেকে অনুপ্রাণিত)


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ