শিরোনাম
শুরু হতে পারে শৈত্যপ্রবাহ!! বিজয়ের এই মহান দিনে পৃথিবীর সব মানুষকে মুক্তিজোটের শুভেচ্ছা শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে সরকারী ছুটির দাবি মুক্তিজোটের অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দলকে মুক্তিজোটের অভিনন্দন বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে মুক্তিজোট সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহকে ট্রাকচাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা ফ্যাসিস্ট নির্মুলে কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীভুত-কেন্দ্রীকরণ করার কথা বলেন মুক্তিজোটের সাধারণ সম্পাদক কাঞ্চনজঙ্ঘা ট্যুর (Kanchenjunga Tour) ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়েছে মুক্তিজোট নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনে মুক্তিজোটের ১২ প্রস্তাব
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৯ পূর্বাহ্ন

আশ্রয়কেন্দ্রে দিন কাটছে “মারুফের”

বিশেষ প্রতিনিধি / ৪৮১ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : রবিবার, ৬ জুন, ২০২১

‘গত ২০শে এপ্রিল লকডাউনের বিষয়ে ঢাকার আদালত এলাকার সংবাদ প্রচার করছিলেন আইপি টিভির এক সাংবাদিক। তিনি যখন সরাসরি সংবাদ প্রচার করছিলেন তখন বুঝে ওঠার আগেই আচমকা ক্যামেরার ফ্রেমে ঢুকে পড়ে ১১ বছর বয়সী এক পথশিশু। সে বলতে থাকে ‘আচ্ছা- যে লকডাউন দিয়েছে, সামনে ঈদ, মানুষে খাবে কী? মাননীয় মন্ত্রী যে একটা লকডাউন দিয়েছে সেটা ভুয়া, থ্যাংক ইউ।’
বলার সঙ্গে সঙ্গে ওই পথশিশুটি ক্যামেরার ফ্রেম থেকে সরে যায়। পরে ওই ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। অনেকেই শিশুটির সাহসিকতা, সাবলীলভাবে কথা বলা ও স্মার্টলি ক্যামেরার ফ্রেম থেকে বেরিয়ে যাওয়া দেখে প্রশংসা করে। সবাই আগ্রহের সঙ্গে জানতে চায় কে ওই শিশুটি। পরে জানা যায়- ওই শিশুর নাম মারুফ। সে একজন পথশিশু।বাবা-মা’র সঙ্গে থাকে না সে। তার বাবা মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুরে থাকেন। মা-বাবার ডিভোর্স হয়ে গেছে। তারা এখন আলাদা সংসার করেন। বাবা ও মায়ের সংসার বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পর মারুফ বড় অসহায় হয়ে যায়। পরে সে ঢাকায় চলে আসে। ঠাঁই হয় সড়কের পাশে ফুটপাথে, পার্কের খোলা জায়গায়।
ঘটনার পরই পরই তার আরেকটি ভিডিও অনলাইন মাধ্যমে ভাইরাল হয়। তার বাম চোখ ফোলা দেখা যায়। তার বাম চোখ কেন ফোলা সে বিষয়ে তার এবং কারও পক্ষ থেকে নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যায়নি। যদিও ওই ছবি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা আলোচনা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই শিশু এখন মিরপুরে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য করা সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে আছে। তাকে সেখানে থাকা অন্য শিশুদের মতো তিনবেলা খাবার ও পড়াশুনার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান জানান, একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর শিশুটি সবার নজরে আসে। পরে জানা যায় ওই শিশুটির নাম মারুফ। সে কোর্ট এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ভাসমান শিশু ছিল। মানুষের কাছে ভিক্ষা চাইতো। তাকে বর্তমানে মিরপুরের সমাজসেবা অধিদপ্তরের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য করা সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।  
এ বিষয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসার (ঢাকা সিএমএম কোর্ট) এসএস মাসুদ রানা গতকাল মানবজমিনকে জানান, ওই শিশুটি সুবিধাবঞ্চিত ছিল। তার থাকা ও সুচিকিৎসার জন্য তাকে মিরপুরের সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।  যেসব  শিশু এতিম ও অসহায় তাদের ওই আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হয়ে থাকে।
গতকাল সকালে ওই আশ্রয়কেন্দ্রে গেলে মারুফের বিষয়ে কেউ নাম প্রকাশ করে কোনো তথ্য দিতে চাননি। তারা সবাই বলেন যে, মারুফের বিষয়ে কথা বলা নিষেধ আছে। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কেন্দ্রের এক কর্মচারী জানান, এ আশ্রয়কেন্দ্রে তাকে সবাই ‘লকডাউন মারুফ’ নামে চেনে। সে এখানে এসে প্রথমে থাকতে চাচ্ছিল না। সবাইকে বলতো যে, সে তার মায়ের কাছে যাবে। মুন্সীগঞ্জে গ্রামের বাড়িতে যাবে। কিন্তু, আশ্রয়কেন্দ্রে সুযোগ-সুবিধা পেয়ে এখন সে আর কোনো কথা বলে না।  
সূত্র জানায়, সব শিশুর মতো সে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর নাস্তা করে। এরপর বই ও খাতা নিয়ে পড়তে বসে। দুপুরে খাবারের পর ঘুমিয়ে পড়ে। বিকালে বসে এবং খেলে সময় কাটায়। সন্ধ্যায় আবার পড়তে বসে। রাত হলে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। তাকে আশ্রয়কেন্দ্রের কর্মকর্তারা অনেক আদর ও যত্ন করে। এভাবেই ওই আশ্রয়কেন্দ্রে ২৪ ঘণ্টা কাটছে তার।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ