১৬ই ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রিঃ তারিখে মুক্তিজোটের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য (দপ্তর)- উত্তম কুমার ঘোষ স্বাক্ষরিত যৌথ বিবিৃতিতে মুক্তিজোটের সংগঠন প্রধান আবু লায়েস মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহজামাল আমিরুল বিজয়ের এই মহান দিনে বাংলাদেশিসহ পৃথিবীর সব মানুষকে মুক্তিজোটের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
বিবিৃতিতে তাঁরা বলেন ১৯৫০ সালে রাজশাহীর খাপড়াছড়ি ওয়ার্ডে বাঙ্গালী রাজবন্দীদের উপর গুলি দিয়ে শুরু, অতঃপর ৫২র ভাষা আন্দোলন ৬ দফা থেকে ৭০ হয়ে ৭ই মার্চের প্রতিরোধী উচ্চারণ এবং সশস্ত্র প্রতিধ্বনিতে ২৬শে মার্চ বঙ্গীয় অস্তিত্বের সদম্ভ ঘোষণায় ১৭ই এপ্রিল বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে বাংলার শাসন নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা নিজেদের হাতে তুলে নেয় স্বাধীন বাংলার প্রথম সরকার এবং তা কেবল প্রথম সরকার নয় বরং দল মত নির্বিশেষ জাতীয় সরকার ছিল সেটি।
১৭৫৭ সালের ২৩শে জুন, পলাশীর এমনি এক আম্রকাননে- বাংলার শাসন নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা তথা আমাদের স্বাধীনতা দেশীয় ষড়যন্ত্র আর বিদেশী চাতুর্যতায় হাতছাড়া হয়েছিল; সারগতভাবে সমগ্র ভারতবর্ষেরও স্বাধীনতার সূর্যাস্তের দিন ছিল সেটি অতঃপর দীর্ঘ আঁধার পথে ১৯৩০ সালে তিনদিনের জন্যে হলেও সমগ্র ভারতবর্ষের স্বাধীনতার প্রথম সূর্যোদয় ঘটে এই বাংলাতেই এবং তা মাস্টারদা সূর্যসেনের নেতৃত্বে চট্টগ্রামে। জাতীয় রাজনীতি ও তার দীর্ঘ পথ চলার পরিণতিতেই প্রায় ২১৪ বছর পর, ১৭ই এপ্রিল, ১৯৭১ সালে ইতিহাসের পরম্পরায় অশ্রু-ক্রোধ-ভালোবাসায় বঙ্গ হৃদয় এদিন কেঁদেছিল। আর কাঁদতে কাঁদতেই যেন ইতিহাসের চাকাকে নিজেদের জয়ের দিকে টেনে ধরেছিল।
তাঁরা আরও বলেন আপন ভূমিতে প্রায় নয় মাসের রক্তাক্ত যুদ্ধে ৩০ লক্ষ মানুষের তাজা প্রাণ আর ২ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রম হারিয়ে বৈশ্বিক রাজনীতির ময়দানে কূটনৈতিক জঙ্ঘ জিতে- ১৬ই ডিসেম্বর, ১৯৭১ জাতীয় সরকারের নেতৃত্বেই পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নিজের স্বাধীন সার্বভৌম অস্তিত্ব প্রতিষ্ঠা করে- সবুজ ঘেরা সূর্যস্পর্শিত রক্ত স্মারক-এর স্পর্ধিত পতাকা হাতে নিজের বিজয় ঘোষণা করে। এমনকি এই উপমহাদেশে ‘স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ’ই একমাত্র দেশ- যে দেশটি কোন গভর্নর জেনারেলের (লর্ড মাউন্ট ব্যাটেন) আদেশ বলে জন্ম নেয়নি বরং তা জাতীয় রাজনীতির পরিণতি অর্থেই অর্জিত হয়েছে।
স্বাধীনতার অর্ধ শতাব্দী পর, জাতীয় রাজনীতির মর্যাদায় অঙ্কিত সেই পতাকা ও তার রক্ত স্মারকে সংবদ্ধ হয়ে উঠুক আমাদের জাতীয় রাজনীতি- যা হবে আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে যথার্থই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের রাজনীতি।
অর্থাৎ ২০২৪ এর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থান পরবর্তী ফ্যাসিবাদমুক্ত পরিবেশে এবারের বিজয় দিবস অবশ্যই আমাদের জন্য বেশি আনন্দের ও গৌরবের এবং অনেক বেশি অর্থবহ এবং তাৎপর্যপূর্ণ। তাই তাঁরা প্রত্যাশা করেন এ বিজয় দিবস যেন হয়ে উঠে বারবার ঠকে যাওয়া জনগণের প্রতি রাষ্ট্র ও সরকারের দায় কিংবা প্রতিশ্রুতি পূরণের।