শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিন খুদে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কিছুটা কম দেখা গেছে। শিক্ষার্থী উপস্থিতি কম হলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে গতকাল রবিবার ক্লাসে পাঠ কার্যক্রমে অংশ নেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। করোনার কারণে দীর্ঘ প্রায় ১৭ মাস পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলেছে। এ সময়ে এক শ্রেণির শিক্ষার্থী পরবর্তী শ্রেণিতে উঠে গেছে। তাই বদলেছে শিক্ষক, সহপাঠী ও ক্লাস। দীর্ঘদিন পর স্কুলে এসে অনেকেই ভুল করে চলে যায় পুরনো ক্লাসে।
আবার নানা বিধি-বিধানে অনভ্যস্ত করো কারো মধ্যে এক ধরনের অস্বস্তিও ছিল। মাঝেমধ্যেই অনেকে মাস্ক খুলে নিজের আসন ছেড়ে পরিচিত বা সহপাঠীর কাছে যাওয়ার চেষ্টা করে। এমন নানা বিষয়ই উঠে এসেছে ঢাকার বাইরে আমাদের ব্যুরো, নিজস্ব প্রতিবেক, প্রতিনিধির পাঠানো খবরে।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, দেড় বছর পর রাজশাহীর প্রায় সাড়ে চার লাখ শিক্ষার্থী স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে ক্লাসে ফিরেছে। গতকাল রবিবার সকালে রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন এলাকাতেই দেখা গেছে পথে পথে ছেলেমেয়েরা হেঁটে যাচ্ছে। কেউ অভিভাবকের সঙ্গে, কেউ সহপাঠীদের সঙ্গে দলবেঁধে; কেউবা একাকী। সকালে সরেজমিন নগরীর শিরোইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি পিএন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মসজিদ মিশন অ্যাকাডেমি (বালিকা), বিবি হিন্দু অ্যাকাডেমি, বরেন্দ্র মহাবিদ্যালয়, শাহমখদুম কলেজসহ বেশ কয়েকটি বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে- দীর্ঘ সময় পর শিক্ষার্থীরা রবিবার সকালে উৎসবমুখর পরিবেশে ক্লাসে ফিরেছে।
নিজস্ব প্রতিবেদক, কুমিল্লা থেকে জানান, কুমিল্লা জিলা স্কুল, নবাব ফয়েজুনন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কুমিল্লা মডার্ন হাইস্কুল, কালেক্টরেট স্কুল ও কলেজ, মনোহরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো কুমিল্লা ঐতিহ্যবাহী স্কুল-কলেজগুলোতে যেন নতুন করে প্রাণ ফিরে এসেছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে স্কুল প্রাঙ্গণ। উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা।
যশোর প্রতিনিধি জানান, যশোর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসমিন জানায়, স্কুলের ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে আমার তাপমাত্রা মেপে, ফুল ও চকলেট দিয়ে স্বাগত জানিয়েছেন শিক্ষকরা। স্কুলে সাজ সাজ রব। স্কুলে আসতে পেরে আমার খুব ভালো লাগছে। আশা করি এভাবে আস্তে আস্তে সব স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, জেলা শহরের আফরোজা রমজান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মূল ফটকে শিক্ষক ও স্টাফরা শিক্ষার্থীদের থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে তাপমাত্রা পরীক্ষা করেন। তার পর যাদের তাপমাত্রা স্বাভাবিক তারা বিদ্যালয়ে প্রবেশ করেন। শ্রেণিকক্ষে প্রবেশের আগে নির্দিষ্ট স্থানে সাবানপানি দিয়ে হাত ধুয়ে নিচ্ছে শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে কথা হয় দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাইশা তাবাসসুমের সঙ্গে। সে জানায়, দীর্ঘ দেড় বছর পর বিদ্যালয়ে আসলাম। অনেক ভালো লাগছে।