গরমজনিত সমস্যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর হলো হিটস্ট্রোক। দীর্ঘসময় প্রচণ্ড গরমে থাকার ফলে শরীরের তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে গেলে হিটস্ট্রোক হয়। লক্ষণ শরীর প্রচণ্ড ঘামতে শুরু করে, তবে একসময় হঠাৎ তা বন্ধ হয়ে যায়। শ্বাস–প্রশ্বাস দ্রুত হয়ে যায়।
নাড়ির অস্বাভাবিক স্পন্দন—ক্ষীণ বা দ্রুত হয়ে পড়ে। রক্তচাপ কমে যায়।প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যায়।
হাত–পা কাঁপা, শরীরে খিঁচুনি, মাথা ঝিমঝিম করা ও তীব্র মাথাব্যথা হয়। ত্বকের বর্ণ লালচে হয়ে যায়। আক্রান্ত ব্যক্তি অস্বাভাবিক আচরণ করতে পারেন। অসংলগ্ন কথাবার্তাও বলতে পারেন। অনেক সময় আক্রান্ত ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। কখনো কখনো আক্রান্ত ব্যক্তি পুরো নিস্তেজ হয়ে পড়েন, এমনকি কোমা বা শকে চলে যেতে পারেন।
কী করবেন:
প্রথমেই শরীরের তাপ কমানোর জন্য ঠাণ্ডা বা বরফ পানি দিয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর মুছে দিন। বাতাস আছে এমন শীতল জায়গায় আনুন নিয়ে আসুন। শরীরের কাপড় যথাসম্ভব খুলে নিন বা ঢিলে করে দিন। প্রচুর ঠাণ্ডা পানি, ফলের শরবত অথবা স্যালাইন খেতে দিন। জ্ঞান হারিয়ে ফেললে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হাসপাতালে নিতে হবে।
যাদের হতে পারে:
যেকোনো বয়সের মানুষের হিটস্ট্রোক হতে পারে। তবে সাধারণত ৪ বছরের কম বয়সী শিশু ও ৬০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তি, অর্থাৎ যাঁদের গরম সহ্যের ক্ষমতা কম, তাঁদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। যাঁদের শরীর খুব দুর্বল, তাঁরাও হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারেন। কিডনি, হার্ট, লিভার ও ডায়াবেটিসের রোগীর হিটস্ট্রোক হতে পারে। ক্রীড়াবিদ, ব্যায়ামবিদ ও প্রচণ্ড রোদে কাজ করেন, এমন ব্যক্তিদেরও হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
হিটস্ট্রোক এড়াতে যা খাবেন:
সারা দিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। চিনি ও কৃত্রিম চিনি (আর্টিফিশিয়াল সুইটনার) ছাড়া পানিতে লেবু, শসা, মালটা, কমলা বা স্ট্রবেরির স্লাইস দিন। কয়েক ঘণ্টা ঢেকে রাখুন। খাওয়ার সময় চাইলে লেবুর রসও মেশাতে পারেন। ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে টক্সিনের সঙ্গে সঙ্গে পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ফসফরাস ও ক্লোরাইড বের হয়ে যায়। সেলারি জুস পারফেক্ট রিহাইড্রেটর। এতে রয়েছে পটাশিয়াম ও প্রাকৃতিক সোডিয়াম। প্রতিদিন সেলারি জুস খেলে শরীরে তাপ সহ্যক্ষমতা বাড়বে।