শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৪৪ পূর্বাহ্ন

খেজুরের রস খেতে গিয়ে গণপিটুনির শিকার?

রিপোটারের নাম / ৩৬১ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : শনিবার, ৭ জানুয়ারী, ২০২৩

চুয়াডাঙ্গায় খেজুরের রস খেতে গিয়ে চোর সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হয়েছেন তিন কিশোর। পরে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করলে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে।

শুক্রবার রাতে সদর উপজেলার মোমিনপুর ইউনিয়নের ট্যাংরামারির মাঠে ১৫ থেকে ২০ জনের একটি দল খেজুরের রস খেতে গেলে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, গতকাল রাতে ১৫ থেকে ২০ জন কিশোর মিলে ট্যাংরামারির মাঠে খেজুর রস খেতে যায়। গ্রামবাসী তাদের চোর সন্দেহে একজোট হয়ে ধাওয়া দিয়ে তিন কিশোরকে আটক করে। এ সময় বাকিরা পালিয়ে যায়। আটকদের এলাকাবাসী তাদের গণপিটুনি দেয়। পরে এলাকাবাসীদের কেউ জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ কল করলে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিন কিশোরকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে হেফাজতে নেয় পুলিশ।

আহতরা হলেন চুয়াডাঙ্গা শহরের ইসলামপাড়ার লালনের ছেলে পৃতম (১৪), জিনতলাপাড়ার মিনার ছেলে আমান (১৭), একই এলাকার শাহিনের ছেলে পারভেজ (১৬)।

গ্রামবাসীদের দাবি, শীতের মৌসুমে গাছিরা অনেক কষ্ট করে খেজুরগাছ কেটে রস সংগ্রহ করে গুড় বা পাটালি বিক্রি করে উপার্জন করে আসছে। মাঠে কিংবা রাস্তার পাশে খেজুর গাছ থাকায় রাতের আধারে মানুষ এসে রস খেয়ে যায়। পাহারা দিলেও একাধিক লোক থাকায় উল্টো হুমকি-ধামকি দেয় তারা। আবার অনেক সময় রস খেয়ে ভাড় নিয়ে ও ভেঙে রেখে যায়।

এলাকাবাসী জানায়, গতকাল রাতে একদল ছেলের মাঠে দেখতে পায় গ্রামবাসী। একসাথে এত লোক দেখে গ্রামবাসীরা ডাকাত ভেবে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। তখন গ্রামবাসী একত্রে হয়ে তাদেরকে ধাওয়া দেয়। এ সময় সবাই পালাতে পারলেও তিনজন ধরা পড়ে। তাদেরকে করে চড়-থাপ্পর দিয়ে পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়।

আহত পৃতমের বাবা লালন বলেন, গতকাল রাতে ইসলামপাড়ায় ওয়াজ শোনার কথা বলে বের হয় পৃতম। ওয়াজে না গিয়ে ১৫-২০ জন মিলে ট্যাংরামারিতে খেজুর রস চুরি করে খেতে যায়। এ সময় গ্রামবাসী চোর সন্দেহে ধাওয়া করলে সবাই পালালেও পৃতমসহ তিনজন ধরা পড়ে। তাদেরকে ব্যাপক মারধর করে পুলিশে দেন গ্রামবাসী। পরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে থানা হেফাজতে নিয়েছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা: হাসানুর রহমান বলেন, রাতে তিন কিশোরকে হাসপাতালে নিয়ে আসে পুলিশ সদস্যরা। তাদের শরীরের বেশিরভাগ স্থানেই আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।

উদ্ধারকারী চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুম বিল্লাহ বলেন, জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ থেকে কল পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিন কিশোরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে পুলিশ। তারা খেজুরের রস চুরি করার সময় হাতেনাতে আটক হওয়ায় সামান্য মারধর করেছে গ্রামবাসী। চিকিৎসা শেষে তাদেরকে থানা হেফাজতে নেয়া হয়েছে। আগামীকাল তাদের পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ