শিরোনাম
শুরু হতে পারে শৈত্যপ্রবাহ!! বিজয়ের এই মহান দিনে পৃথিবীর সব মানুষকে মুক্তিজোটের শুভেচ্ছা শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে সরকারী ছুটির দাবি মুক্তিজোটের অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দলকে মুক্তিজোটের অভিনন্দন বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে মুক্তিজোট সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহকে ট্রাকচাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা ফ্যাসিস্ট নির্মুলে কর্তৃত্ববাদী শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীভুত-কেন্দ্রীকরণ করার কথা বলেন মুক্তিজোটের সাধারণ সম্পাদক কাঞ্চনজঙ্ঘা ট্যুর (Kanchenjunga Tour) ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়েছে মুক্তিজোট নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনে মুক্তিজোটের ১২ প্রস্তাব
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৩ পূর্বাহ্ন

সফটওয়্যার বানিয়ে চলেছেন দেশের প্রথম নারী প্রোগ্রামার

অনলাইন ডেস্ক / ১৯১ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : শনিবার, ১১ মার্চ, ২০২৩

‘আমি খুবই ভালো আছি, ভালো থাকার কারণ আমার কাজ। ব্যস্ত আছি রাইট হেলথ নামের একটি অ্যাপ তৈরির কাজে। যাতে থাকবে স্বাস্থ্যের তথ্যসহ নানা রকম  সুযোগ–সুবিধা। অনেক দূর এগিয়েছি। আরও বেশি লোকবল পেরে দ্রুতই কাজটি শেষ করতে পারতাম।’ গত সোমবার প্রথম আলোকে নিজের বর্তমান কাজ নিয়ে এসব কথা বলেন বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রোগ্রামার ৭৪ বছর বয়সী শাহেদা মুস্তাফিজ।

শাহেদা মুস্তাফিজ শোনালেন আজ থেকে প্রায় ৪৭ বছর আগের কথা। সেই সময়ে দেশে হাতে গোনা কয়েকটি সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান ছিল, যেগুলো বিদেশে সফটওয়্যার রপ্তানি করত। এসব প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের সবাই ছিলেন পুরুষ। কারণ, তখন কোনো নারী তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কাজ করতেন না। সুযোগও ছিল না। দেশের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও কম্পিউটারবিজ্ঞান পড়ানো হতো না। তবে দমে থাকেননি শাহেদা মুস্তাফিজ।১৯৭৫ সালে শাহেদা মুস্তাফিজের কাজ শুরু হয়। অর্থনীতিতে পড়াশোনা করলেও যুক্তরাষ্ট্রের এনসিআর করপোরেশনে সফটওয়্যার আর্কিটেকচার বিষয়ে এক বছরের প্রশিক্ষণ নেন শাহেদা মুস্তাফিজ। ১৯৭৬ সালে সে প্রতিষ্ঠানের বাংলাদেশ শাখায় সিস্টেমস ম্যানেজার হিসেবে কাজ শুরু করেন। পরে এনসিআরের বাংলাদেশ অংশ কিনে নেয় দেশের প্রথম দিককার সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান লিডস করপোরেশন। শাহেদাও লিডসের কাজ শুরু করেন, অগ্রণী ভূমিকা রাখেন দেশের ব্যাংক অটোমেশন বা ব্যাংকিং সফটওয়্যার তৈরিতে। বিশেষ অটোমেটেড টেলার মেশিন (এটিএম) পরিচালনার সফটওয়্যারের প্রোগ্রামিংয়ে তাঁর বিশেষ অবদান রয়েছে।১৯৪৯ সালে জন্ম শাহেদা মুস্তাফিজের। সেই হিসাবে এখন তাঁর বয়স ৭৪ বছর। এখনো সফটওয়্যার তৈরিতে সক্রিয় তিনি। ছেলে রিদওয়ান মুস্তাফিজের সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান রাইট সলিউশনের সফটওয়্যার বিভাগের দেখভাল করেন শাহেদা মুস্তাফিজ। কাজ করছেন বেশ কিছু সফটওয়্যার নিয়ে। প্রথম আলোকে তিনি জানান এরই মধ্যে তাঁদের তৈরি স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসেবা এবং হিসাব ব্যবস্থানার সফটওয়ার ব্যবহৃত হচ্ছে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে। তিনি বললেন, ‘হাসপাতাল স্বয়ংক্রিয় করার সফটওয়্যার তৈরির কাজে এখন সময় ভালোই কাটছে।’

শাহেদা মুস্তাফিজ এনসিআর ও লিডসে ২২ বছর কাজ করেন। ১৯৯৮ সালে চাকরিতে ইস্তফা দেন। এরপর গড়ে তোলেন নিজের প্রতিষ্ঠান প্রবিতি সিস্টেমস।  ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে চালাতে থাকেন প্রবিতি সিস্টেমস। বিদেশে সফটওয়্যার রপ্তানিতে এই প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এ ছাড়া তিনি কানাডার টোয়েন্টি-টোয়েন্টি টেকনোলজিস ইনকরপোরেটেডের বাংলাদেশ শাখার ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং যুক্তরাষ্ট্রের ই-টেকলজিকস ইনকরপোরেটেডের বাংলাদেশ শাখায় নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। এসবের বাইরে তিনি শিশুদের জন্য এবং বিশেষ করে নারীদের জন্য কম্পিউটার প্রশিক্ষণকেন্দ্র পরিচালনা করেছেন। শাহেদা মুস্তাফিজ চার মেয়ে ও এক ছেলের মা। তাঁর স্বামী প্রয়াত মুস্তাফিজুর রহমান ছিলেন একজন ব্যাংকার।

পুরোনো দিনের কথা ধরে শাহেদা মুস্তাফিজ বলেন, ‘সত্তরের দশকে দেশের কম্পিউটার খাতে কোনো নারী কাজ করতেন না। সে সময় আমি এক মেয়েকে কাজের জন্য নিয়ে এলাম, চাকরি দিলাম। তখন পুরুষ কর্মীরা বলতে লাগলেন, “ম্যাডাম, এই মেয়ে সফটওয়্যারের কাজ কি পারবে?” তখন আমি বললাম, সেটা আমি বুঝব। কিছুদিন পর সেই ছেলেরাই আমার কাছে এসে বলল, “ম্যাডাম, আরও কিছু মেয়ে নিয়োগ দিলে ভালো হতো। কারণ, কাজ খুব ভালো হচ্ছে।” বর্তমানে আমার দলে অনেক নারী কাজ করছেন। তাঁরা চমৎকার কাজ করেন।’

আজ ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য হলো ‘নারী–পুরুষের সমতায় ডিজিটাল প্রযুক্তি’। শাহেদা মুস্তাফিজের কাছে তাই প্রশ্ন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বর্তমানে নারীদের অবস্থান কেমন মনে করেন? দেশের প্রথম নারী প্রোগ্রামার বললেন, ‘আমার এখন খুব ভালো লাগে, যখন দেখি নারীরা তথ্যপ্রযুক্তি খাতে অবদান রাখছেন। তবে এখনো সন্তান-সংসারের পুরো দায়িত্ব নারীর একার। আমাদের কর্মজীবন আর পারিবারিক জীবনের মধ্যে ভারসাম্য করে চলতে হয়। কিন্তু কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ের জন্য দীর্ঘ সময় প্রোগ্রামিং নিয়েই কাটাতে হয়। আমাদের সমাজে এটা সব সময় সবার পক্ষে সম্ভব হয় না। প্রোগ্রামিংয়ে নারীরা কম আসেন ঠিকই, তবে যাঁরা আসেন, তাঁরা কিন্তু খুব ভালো কাজ করেন।’


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ