শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:০৪ পূর্বাহ্ন

“১৪ই ডিসেম্বর, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে সরকারী ছুটির দাবী বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের

নিজস্ব প্রতিবেদক / ৫০৬ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৩

বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট ১৪ ই ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবসকে সরকারি ছুটি ঘোষণার দবি করেছে। তারা আজ সকালে শহীদ বুদ্ধিজীবি কবর স্থানে ১৯৭১ সালের ১৪ ই ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবিদের শ্রদ্ধা নিবেদন করতে মিরপুর-১ এর শহীদ বুদ্ধিজীবি কবর স্থানে পুষ্পমাল্য অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের আলাপ কালে এই দাবি করেন সংগঠন প্রধান আবু লায়েস মুন্না।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন তারা সাংগঠনিক ভাবে ২০১৭ সাল থেকে এই দাবি করে আসছেন। তিনি আরও বলেন একটি জাতিকে মেধাহীন করার জন্য একটি পরিকল্পিত পরিকল্পনার অংশ ছিল এটা।

পরে পরিচালনা বোর্ড প্রধান শাহজালাল আমিরুল
একটি লিখিত প্রেসনোট প্রদান করেন।

প্রেসনোট
“স্মৃতিহত্যা গণহত্যার মতই জঘণ্য!!

১৯৭১ সালে বুদ্ধিজীবী হত্যার পৈশাচিকতা এ দেশ কখনও ভুলবে না, তাই অর্ধ শতাব্দী যাবৎ সর্বস্তরের মানুষ ১৪ই ডিসেম্বর রাস্তায় নেমে আসে। কেবল রায়ের বাজার বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নয় বরং সে শোকের মাতম কালো ব্যান্ডেজ- হয়ে সমগ্র দেশজুড়ে সবার বুকে বুকে ছড়িয়ে পড়ে। যদিও অনতিকাল পরেই সে শোক অশ্রু-ক্রোধ ও অর্জনের স্মারক হিসেবে ‘১৬ই ডিসেম্বর, মহান বিজয় দিবস’ এর আনন্দ হয়ে ফিরে আসে, তবুও বেদনাটুকু যেন রয়েই যায়; অতঃপর অসংখ্য মৃত্যু ও রক্তদামে অর্জিত লাল-সবুজের সার্বভৌম নিশানকে সবাই স্যালুট করে- অশ্রু মুছে। এভাবে ১৪ই ডিসেম্বর হয়ে সব শহীদানের সওগাত আমার পতাকায় ভাসে।

পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী দ্বারা নৃশংস গণহত্যার সাথে বেছে বেছে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা কেবল তাদের নারকীয় পৈশাচিকতার নতুন মাত্রা ভাবলে ভুল হবে বরং স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ বা আমাদের বিজয় অবধারিত জেনেই তা ঘটানো হয়েছিল, যা সন্দেহাতীতভাবে ভবিষ্যৎ জাতীয় জীবন প্রাসঙ্গিকতায় দেশ ও রাষ্ট্র বিরোধী জঘণ্য পরিকল্পনাকেই নিশ্চিত করে।

এক্ষেত্রে, তৎকালীন রাষ্ট্রশক্তির সংশ্লিষ্টতাতেই তা ঘটানো হয়েছিল বিধায় তার প্রত্ত্যুৎরেও ন্যায়ত অনিবার্য হয়ে ওঠে রাষ্ট্রীয় ভূমিকা এবং সেটা কোন ব্যক্তিবিশেষের ক্ষেত্রে নয় বরং সামষ্টিক ক্ষেত্রে ঘটেছিল বলেই- এটা কেবল মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত শ্রদ্ধা বা রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দানের বিষয় নয়, বরং উত্তর প্রজন্মের স্বার্থে তা রাষ্ট্রীয় দায়ীত্বের অন্তর্গত। তাই এ দিনটিকে যদি রাষ্ট্রীকতা দ্বারা (রাষ্ট্রীয় ছুটি) নির্দিষ্ট না করা হয় তবে তা হবে রাষ্ট্রকৃত স্মৃতিহত্যার অপরাধ।

স্মর্তব্য, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ ইতোমধ্যে অর্ধশত বছর পেরিয়ে এসেছে- যথারীতি রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্বে এ দেশ ও তার মানুষই ছিল; তবুও উত্তর প্রজন্ম জানে না ১৪ই ডিসেম্বর কী, কেন, কিভাবে, কখন, কোথায় ঘটেছিল! দীর্ঘ বিক্ষয় আর জেঁকে বসা ভ্রান্তির বিরুদ্ধে- সরকারগুলোর উদাসীনতা তো বটেই এমনকি কোন রাজনৈতিক দলকেও ১৪ই ডিসেম্বর, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসকে রাষ্ট্রীয় ছুটি ঘোষণা করার দাবীতে তেমন সোচ্চার হতে দেখা যায়নি। বিশেষত, জাতীয় একটি দিন হিসেবে যৌক্তিকভাবেই তা যে রাষ্ট্রকৃত বা প্রাতিষ্ঠানিকতার শর্তকে অনিবার্য করে তোলে সেটাও এত বছরে বোধগম্য হচ্ছেনা- এটা সদ্য স্বাধীন দেশ ও তার জাতীয় জীবনের প্রত্যুষে সেই সূর্য হারানোর আঁধার পরিণতি নয় কি?

এদিক থেকে, নাগরিকবোধ সম্পন্ন মানুষ মাত্রই অদ্যাবধি- স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের প্রতিটি সরকারের মধ্যেই গণহত্যার পদাংক মুছে ফেলার ভূমিকাকে চিহ্নিত করে এসেছে! স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ ও তার সরকার নিশ্চয়ই পাকিস্তানী রাষ্ট্রজান্তার উত্তরাধিকার এর পর্যায়ে নিজেদেরকে নামিয়ে দিতে ঘৃণা বোধ করবে।

অতএব, সংগত কারণেই অবিলম্বে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসকে রাষ্ট্রীয় ছুটি ঘোষণা করা হোক।”
শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় উপস্থিত ছিলেন আবু লায়েস মুন্না -সংগঠন প্রধান, মোঃ শাহজামাল আমিরুল- পরিচালনা বোর্ড প্রধান, মো: মুজিবুল হক-কাঠামোগত সার্বক্ষণিক, শরীফ মোহাম্মদ বেদুইন হায়দার ও আক্তার হোসেন- কার্যনির্বাহী সদস্য, কেন্দ্রীয় কমিটি, মো: আমানউল্লাহ আমান-সমন্বয়কারী, ঢাকা মহানগর এবং অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এবং বেশ কয়েকটি আসনের সাংসদ সদস্য পদপ্রার্থীরা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ