
না কাক BGN24
ছোটবেলা থেকেই কবিতা লেখার অভ্যাস ছিল। যেটি লিখতাম বা লিখি সেটা কবিতা কিনা তা বিশ্লেষনের দাবি রাখে। তারপরও লেখা চলতে থাকে একটা কবি কবি ভাব মনে। একদিন এক বন্ধু কে বলে বসলাম দোস্ত আমি তো কবিতা লিখি। বলে থেমেছিলাম আর ভাবছিলাম অনেক প্রসংশা শুনবো। একরাশ হতাশা নিয়ে শুনলাম বন্ধু বলে।
দোস্ত এদেশে কবির সংখ্যা কত জানো আমি বিস্ময়ে বলি কত। বন্ধু সরল উত্তর কাকের সংখ্যা যত। কবির সাথে কাকের তুলনা।এতো খাটের তলা আর আগরতলা। মনটা খারাপ হয়ে গেলে। চায়ের দোকানের বিল দিয়ে বাড়ি চলে এলাম। মনটা খুবই খারাপ শেষে কিনা কাক, একেবারে কাক, কা কা ডাকা কাক, কবির সাথে কাকের তুলনা। এক সময় মনটা বিষাদে ভরে গেল। পরদিন আবার বন্ধুর সেই বন্ধুর সাথে কথা বল্লাম আচ্ছা দোস্ত তুমি কেন কবি কে কাকের সাথে তুলনা করলে।কবিকে এমন অপমান করা কি ঠিক । বন্ধু বলে কাকের মত যদি হতে পারো তবে তুমিই হতে পারবে কবি।আমি কবিকে অপমান করিনি বরং কবিকে কাকের ন্যায় শানিত হতে বলেছি।
বন্ধু তুমি রাগ করেছো। আমি বলি বেশি না রাগ হয়নি আমি একটি সাধারন কবি মাত্র তবে একটু খারাপ লেগেছে। বন্ধু বলে তাহলে শোনা, কাক প্রকৃতির আবর্জনা পরিস্কার করে আর কবিরা সমাজের বিদ্যামান অন্যায়, অসংগতির বিরুদ্ধে লিখে সমাজের আবর্জনা পরিস্কার করে। কোকিল কাকের বাসায় ডিম পাড়ে আর কাক তা দিয়ে বাচ্চা তোলে। কা কা করা কর্কশ কাকের কারণে সুমধুর সুরের ককিল বাচ্চার জন্ম হয়। কবিদের মধ্যে দিয়েই সমাজে সাহিত্যে সুন্দরের জন্ম হয়। অসুন্দর থেকে জন্ম হয় শিল্পীর কবিরা মানবতাকে লালন করে তথা তা দেয়। কি খারাপ লাগছে বন্ধু ।
আমি মাথা নাড়ালাম আর বল্লাম এভাবে ভাবিনি। আরও শোন কাকের একটা ঐক্য আছে। একটা কাককে মারলে শত শত কাক এসে প্রতিবাদ করবে। কাকের এই এক্য জোট আমাদের ঐক্য মহা ঐক্যর চেয়ে শক্তিশালি কারন তাদের পদ পদবীর লোভ নেই । আর সবচেয়ে বড় কথা হল কাকের সঙ্গী মারা গেলে কাক বাকি জীবন একাই কাটায়। এত বড় ত্যাগ আমার মনে হয় কোন প্রাণীকুল করে কিনা সেটা দেখার ব্যাপার। দেখ জীবন সঙ্গীর প্রতি কাকের কি রকম কমিটমেন্ট। তো বন্ধু কি বলবে এবার ।
আমি বল্লাম একুশ শতকের বট তলায় বসে আমি বলতে চাই কবি নয় হতে চাই কাক। আর বলতে চাই ” কলিকাতার কমলা কান্তের কনিষ্ঠ কন্যা কাকলি কাকাকে কহিলেন কাকা কাক কেন কা কা করে, কাকা কহিলেন কা কা করাই কাকের কাজ”।
না কাক BGN24