শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:০৭ পূর্বাহ্ন

বিদ্যুৎ ও আমাদের অর্থনীতি

বিশেষ প্রতিনিধি,www.bgn24.com / ৭৯৬ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ১৯ জানুয়ারী, ২০২১

বিদ্যুৎ ও আমাদের-BGN24

বিদ্যুৎ ও আমাদের অর্থনীতি। আধুনিক বিশ্বের এক বিরাট আবিষ্কার বিদ্যুৎ। মাইকেল ফ্যারেড ও টমাস আলভা এডিসন রা বিশ্বের জ্ঞান বিজ্ঞান কে তথা সভ্যাতার বিকাশে এক বিরাট ভুমিকা রেখেছেন। আমাদের দেশ এখন বিদ্যুৎ এ সক্ষমতা অর্জন করেছে।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কে নিতে হয়েছে অনেক কঠিন সিদ্ধান্ত।

আমরা এই উদ্যোগ কে সাধুবাদ জানায় কিন্তু কিছু টেকনিক্যাল ব্যাপার আছে সেটার আলোচনা প্রয়োজন যেমন অলস বিদ্যুৎ এর বোঝা। অলস বিদ্যুতের বোঝা নিয়ে ফাইজ তাইয়েব আহমেদ:( নেদারল্যান্ডসের ভোডাফোনে কর্মরত প্রকৌশলী এবং টেকসই উন্নয়নবিষয়ক লেখক।)

প্রথম আলোতে একটি ব্যাপার আলোক পাত করেছিলেন। “দেশে বিদ্যুতের উৎপাদন সক্ষমতার বড় অংশই অলস থাকছে। ক্যাপটিভ, নবায়নযোগ্য উৎপাদনসহ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মোট স্থাপিত সক্ষমতা ২২ হাজার ৭৮৭ মেগাওয়াট। কিন্তু ক্যাপটিভ বাদে ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রকৃত উৎপাদন ছিল মাত্র ৯ হাজার ৩৬৩ মেগাওয়াট এবং এই দিনে সর্বোচ্চ উৎপাদন সক্ষমতা ছিল ১৪ হাজার ১৬৫ মেগাওয়াট। চাহিদা না থাকায় গ্রীষ্মকালে, ২০১৯ সালের ২৯ মে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড ছিল ১২ হাজার ৮৯৩ মেগাওয়াট। এই হিসাবে প্রায় ৪৪ শতাংশ স্থাপিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের সক্ষমতা অলস পড়ে থাকছে। নতুন কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র অপেক্ষমাণ বলে অলস পরিমাণ দ্রুতই ৫০ শতাংশ ছড়িয়ে যাবে; যদিও বিদ্যুৎ খাতের মাস্টারপ্ল্যানে মোট স্থাপিত সক্ষমতার ২০ থেকে ২৫ শতাংশের বেশি বিদ্যুৎকেন্দ্রকে অলস বসিয়ে না রাখার নির্দেশনা দেওয়া আছে।

চাহিদা বিবেচনা না করে প্রতিযোগিতাহীন দরপত্রে বহুবিধ অন্যায় সুবিধা ও দায়মুক্তি দিয়ে বেসরকারি খাতে বেশ কিছু তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের অনুমোদন দেওয়া হয়। এগুলো বসিয়ে রেখে গুনতে হচ্ছে মোটা অঙ্কের ক্যাপাসিটি চার্জ। আইপিপি নামক এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রের বোঝা টানতে হবে ১৫ থেকে ২২ বছর। ২০২২ সাল পর্যন্ত আইপিপিগুলোর আয় করমুক্ত। অধিকাংশ ইউনিট অলস থাকায় এদের কারও কারও প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যয় পড়ছে ৭৫ (অ্যাগ্রিকো পাওয়ার সলিউশন) থেকে ৮১ টাকার (প্যারামাউন্ট বিট্রাক এনার্জি) মতো। অন্যদিকে, তেল আমদানিতেও নগদ প্রণোদনা পায় তারা। এদিকে দ্রুত বিদ্যুৎ–সংকটের সাময়িক সমাধান হিসাবে শুরু হলেও কুইক রেন্টাল কেন্দ্রগুলো চলছে ১০ বছর পরেও। পিডিবির হিসাব বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ছয় বছরে পিডিবিকে ক্যাপাসিটি চার্জ গুনতে হয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা, যা বেসরকারি খাত থেকে ক্রয়কৃত বিদ্যুতেরই প্রায় ৩৭ দশমিক ২২ শতাংশ।

একটি–দুটি নয় বহু, সভ্রেন গ্যারান্টি সাধারণত বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীরা কিছুটা বেশি দামের নিশ্চয়তা এবং নিয়মিত বিদ্যুৎ কেনার বাধ্যবাধকতাকে শর্ত হিসেবে রেখে বিনিয়োগ করতে চায়। কিন্তু আমাদের বেসরকারি আইপিপিগুলোকে তৃতীয় পক্ষহীন চুক্তিতে তিন থেকে পাঁচ গুণ দামের নিশ্চয়তা দেওয়া আছে। আছে ক্যাপাসিটি চার্জ, ওভারহোলিং চার্জ, তেল আমদানি প্রণোদনা, কর অবকাশ সুবিধা, শুল্কমুক্ত সুবিধাসহ বহু সভ্রেন গ্যারান্টি। আছে সহজ শর্তের ঋণের সুবিধাও।

তারা জমি ক্রয়ে রেজিস্ট্রি কর মওকুফ করার সুবিধা চায়। মোট বিনিয়োগের অন্তত ১০ শতাংশ মূল্যের খুচরা যন্ত্রপাতি প্রতিবছর করমুক্ত সুবিধায় আমদানি করতে চায়। বিপিসির আমদানি করা তেলের মান নিয়ে প্রশ্ন (যদিও তা পরীক্ষিত) তুলে সেখানেও নতুন প্রণোদনা চায়! এমনকি ২০০৬ শ্রম আইনের কর-পূর্ব মুনাফার ৫ শতাংশ শ্রমিককল্যাণ তহবিলে রাখার বিধানও সংশোধন চায়।

এ ধারণা অমূলক নয় যে ক্ষমতাবলয়ের দুর্নীতির চৌহদ্দিতে থাকা লোকেদের কুপ্রভাবে অকারণে রাষ্ট্রের বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। দলীয় ব্যবসায়ীদের দিয়ে রাষ্ট্রের তহবিল লুটের এমন বেসরকারিকরণ নজিরবিহীন।

এই চুক্তিগুলোকে পরিমার্জন ও সংশোধন করে রাষ্ট্রীয় অপচয় থামানোর সুযোগ রয়েছে।” আমাদের উচিৎ রাস্ট্রীয় সম্পাদের সুসম বন্টন করে বিদ্যুৎ খাতের অপচয় রোধ করার মাধ্যমে জনগনের কল্যানে ব্যায় হলে আমাদের অর্থনীতির জন্য এটা হবে ভালো ব্যাপার।

আমরা ব্যাপারটিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করি।

বিদ্যুৎ ও আমাদের-BGN24


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ