শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:২৯ পূর্বাহ্ন

কাশ্মীর সমস্যার সমাধান ভারতকেই বের করতে হবে!

বিশেষ প্রতিনিধি / ৭৪৯ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : শনিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

কাশ্মির সমস্যার কারনে এই অঞ্চলে শান্তিপূর্ণ অবস্থান বার বার বিগ্নিত হচ্ছে। ফলে কাশ্মীর সমস্যা সমাধানে ভারতকেই শান্তিপূর্ণ উপায় বের করতে হবে বলে মানববন্ধনে মন্তব্য রেখেছেন উপস্থিত নেতৃবৃন্দ।

আজ শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ইয়েস বাংলাদেশ, নিপীড়িত গনমঞ্চ, ইয়ংস্টার কমিউনিটি বাংলাদেশ, মানুষের মাঝে মানুষের কাজে, সেভেনটি ওয়ান প্রেস ক্লাব, বাংলার দপর্ণ ফাউন্ডেশন, এর যৌথ  উদ্যোগে আয়োজিত ‘কাশ্মির সমস্যা ও ভারতের আভ্যন্তরিন সমস্যা সমাধাণে ভারতকেই শান্তিপূর্ণ সমাধাণ করতে হবে’-শীর্ষক মানববন্ধনে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।

বাংলার দর্পণ ফাউন্ডেশন এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, শাহারুল ইসলাম রকির সঞ্চালনায়, ইয়েস বাংলাদেশের চেয়ারম্যান, এস.এম  আলতাফ হোসাইন এর সভাপতিত্বে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন, নিপীড়িত গনমঞ্চের সভাপতি, সুলতান শাহ আলম, ইয়ংস্টার কমিউনিটি বাংলাদেশ এর আহবায়ক শাহজাহান শাহীম, আনিছুর রহমান দেশ প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, ভারত আমাদের অন্যতম প্রতিবেশী দেশ। ১৯৭১ সাল থেকেই ভারতের সাথে বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ সহ অবস্থান বিরাজ করছে। বাংলাদেশ-ভারতের সাথে সু-সম্পর্কের কারণেই কাশ্মীর ইস্যুকে আমরা শুধুই ভারতের আভ্যন্তরীন বিষয় বলে ভাবতে চাই এবং এর ভিতরেই রাখতে চাই। কিন্তু কিছু পাকিস্তান পন্থী ব্যক্তি কাশ্মীর ইস্যুকে নিয়ে এই দেশেরই একটি বিশেষ দূতাবাসের ব্যক্তিবর্গের সাথে যোগসাজসে বাংলাদেশের ভিতরে তৈরী করতে চাচ্ছে একটি ভারত বিদ্বেষী মনোভাব, যা তরান্বিত হলে সময়ের ব্যবধানে দুই দেশের শান্তিপূর্ণ সহ অবস্থানের ক্ষেত্রে অন্তরায় সৃষ্টির সহায়ক হতে পারে।

বক্তারা বলেন, ১৯৪৯ সালের ১৭ অক্টোবর ভারতের সংবিধানে যুক্ত হয় ৩৭০ ধারা। ভারতীয় সংবিধানের এই ধারাটি ছিল একটা অস্থায়ী সংস্থান। এ ধারা বলে জম্মু কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা ও বিষেশ স্বায়ত্বশাসন দেয়া হয়েছিল। এই ধারার মাধ্যমে জম্মু কাশ্মীরকে নিজেদের সংবিধান ও আলাদা পতাকা রাখার স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছিল। সংবিধানের ১১ নম্বর অংশে অস্থায়ী পরিবর্তনশীল এবং বিশেষ সংস্থানের কথা বলা হয়েছে। ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারার অধীনেই ছিল ৩৫ এ ধারা। ৩৫ এ ধারা অনুযায়ী কাশ্মীরের স্থায়ী বাসীন্দা ছাড়া অন্য রাজ্যেও কেউ সেখানে স্থাবর সম্পত্তি কিনতে পারতেন না। কিনতে হলে অন্তত ১০ বছর জম্মু-কাশ্মীরে থাকতে হতো। স্থায়ী বাসীন্দা ছাড়া কাশ্মীরে ভারতের অন্য রাজ্যের কেউ সেখানে চাকরীর আবেদন করতে পারতেন না। কে স্থায়ী বাসীন্দা এবং কে নয় তা নির্ধারণ করার অধিকার রাজ্য বিধান সভায় উপরই ন্যস্ত ছিল। জম্মু-কাশ্মীরের কোন নারী রাজ্যের বাইরে কাউকে বিয়ে করলে তিনি সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হতেন। তার উত্তরাধীকারীরাও এই সম্পত্তির মালিকানা পেতেন না।

তারা বলেন, কাশ্মীরিদের দ্বৈত নাগরিকত্ব স্বীকৃত ছিল- এখন থেকে তারা শুধুই ভারতীয়। কাশ্মীরিদের আলাদা পতাকা ছিল। এখন শুধুই ত্রিবর্ণরঞ্চিত পতাকা। কাশ্মীরে অর্থনৈতিক জরুরী অবস্থা কার্যকর করা যেত না। এখন যাবে। সাধারণ জরুরী অবস্থা কার্যকর করা যেত না, এখন যাবে। সংখ্যালঘুদের জন্য আলাদা সংরক্ষণ ছিল না এবার থাকবে। অন্য রাজ্যের কেউ জমি কিনতে পারতো না এখন পারবে। ফলে শিল্প হতো না এখন শিল্প সম্ভাবনা বাড়লো। তথ্যের অধিকার আইন কার্যকর ছিল না। এখন থেকে এই আইন কার্যকর হল। অর্থাৎ কাশ্মীর অঙ্গীভূত হলো ভারতের মূল স্রোতে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, কাশ্মীরের স্বায়ত্বশাসন বাতিলের পক্ষে বিপক্ষে মতামত রয়েছে ভারতে এবং আর্ন্তজাকিত মহলে। এ প্রসঙ্গে পাকিস্তান সরাসরি তাদের সার্বভৌমত্বের প্রতি যখন হুমকি স্বরুপ মনে করছে ঠিক তখনই আর একটি মুসলিম দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত কাশ্মীরের স্বায়ত্ব শাসন ও বিশেষ মর্যাদা বাতিলের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছে। ভারতে নিযুক্ত আমিরয়াত রাষ্ট্রদূত ড: আহমেদ আল বান্নাকে উদ্বৃত করে এর সমর্থনের কথা জানিয়েছে দেশটির সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি। ডঃ আল বান্না বলেন রাজ্যের পুর্ণগঠন স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে কোন নতুন ঘটনা নয়। এটা মূলত করা হচ্ছে আঞ্চলিক বৈষম্য দূর করে উন্নতির লক্ষ্যে। ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী এটি ভারতের একটি আভ্যন্তরিন বিষয়।

তারা বলেন, ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের পর হইতে সবচেয়ে বেশী এবং সরাসরি উদ্বিগ্ন দেখা যাচ্ছে ইসলামাবাদকে। তাদের এই উদ্বিগ্নের বিষয়টি তাদের বিবেচনায় যৌক্তিক বলেই তারা বলে আসছেন এবং তাদের আভ্যন্তরীন বিষয় বলে আমরা মনে করি। আর সেই কারনে আমরা বলতে চাই কাশ্মীর ইস্যু ভারত ও পাকিস্তান-সরাসরি এই দুই দেশের দ্বিপক্ষিক ও নিজ নিজ দেশের আভ্যন্তরিন বিষয় বলেই আমরা মনে করতে চাই এবং এই বিষয়কে নিয়ে যদি ঐ দুই দেশ আর্ন্তজাতিক ফোরামের দৃষ্টি নেন এটাও হবে তাদের দুই দেশের নিজস্ব সিদ্ধান্ত।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ