ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রক্ত পরীক্ষার জন্য রক্ত নিতে গিয়ে আমেনা খাতুন (৮০) নামের এক বৃদ্ধার হাত ভেঙে ফেলার অভিযোগ উঠেছে আয়া ও টেকনিশিয়ানের বিরুদ্ধে। শহরের মর্ডান ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ঘটনাটি ঘটে। ভুক্তভোগী আমেনা খাতুন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোমেনা খাতুনের মা এবং শৈলকুপা উপজেলার বসন্তপুর গ্রামের মৃত আফতাব উদ্দীন মৃধার মেয়ে। এ ঘটনায় জেলা সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন যুগ্ম সচিব নিজেই।
অসুস্থ আমেনা খাতুনের নাতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র নাহিদ আনোয়ার ঘটনার বর্ননা দিয়ে বলেন, গত ২৩ জুলাই দাদির পেট ব্যথা ও বমি হচ্ছিল। পরে ২৫ জুলাই বিকেলে তাকে ঝিনাইদহ মডার্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মোকাররম হোসেনকে দেখালে তিনি দাদিকে কিছু পরীক্ষা করতে দেন।পরীক্ষা করানোর জন্য দাদিকে ইসিজি কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। সে সময় ওই কক্ষে একজন নারী আয়া ও একজন পুরুষ টেকনিশিয়ান ছিলেন। একপর্যায়ে ইসিজি কক্ষে আমার দুজন ফুপুকে রেখে আমি বাইরে চলে আসি। এরপর ওই আয়া ফুপুদের একজনকে ইসিজি কক্ষ থেকে বের করে দেন।
নাহিদ বলেন, এর আগে দাদির ডান হাতে ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। সে কারণে তিনি রক্ত নেওয়ার সময় ব্যথার কারণে আয়াকে হাত সোজা করতে দিচ্ছিলেন না। কিন্তু আয়া ও টেকনিশিয়ান মিলে দাদির ডান হাতে এতটাই টান দেন যে, হাতের ওপরের দিকের হাড় (হিউমেরাসের উপরের অংশ) ফেটে আলাদা হয়ে যায়। পরে ২৫ জুলাই এক্স-রে করার পর হাত ভাঙার বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারি।
টেকনিশিয়ান পাঁচ সিসি রক্ত নিতে দাদির হাতে তিনবার সিরিঞ্জ ঢোকান জানিয়ে নাহিদ বলেন, শারীরিকভাবে অনেক দুর্বল থাকায় হাড় ভাঙার যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে দাদি অজ্ঞান হয়ে যান। তার হৃদস্পন্দন ছিল না কয়েক সেকেন্ড। এটা বোঝার পরপরই আমি নিজে তাকে সিপিআর দিই। প্রায় এক মিনিট পর তার পালস ফিরে আসে ও শ্বাস নিতে শুরু করেন। এর কিছুক্ষণ পরই দাদি আবার অজ্ঞান হয়ে যান অনেক চেষ্টার পর রোগির আবার জ্ঞান ফেরে।
এ ঘটনার সাথে সাথে ওই আয়া ও টেকনিশিয়ান ইসিজি কক্ষ থেকে পালিয়ে যান। আমি জরুরি অক্সিজেন দিতে বললেও তারা দেননি। এরপর ডা. মোকাররম এসে কোনো জরুরি সেবা ছাড়াই রোগীকে সদর হাসপাতালে নিতে বলেন। পরে দাদিকে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। এবিষয়ে ডায়াগস্টিক সেন্টারের ম্যানেজার সজিব বলেন আমরা যথেষ্ট যত্নসহকারে কাজটি করেছি, আমাদের কারনে হাত ভঙ্গেনি।