কুড়িগ্রামে জেলার চরাঞ্চলের মাটি বাদাম চাষের উপযোগী হওয়ায় এ বছরও বাদাম চাষ করেছেন কৃষকরা। ফলন হয়েছে সন্তোষজনক। চরের জেগে ওঠা বালু মাটি বাদাম চাষে উপযোগী হওয়ায় বাদাম চাষ করে লাভবান হচ্ছেন অনেকেই।
বাদাম চাষীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,বালু মাটি বাদাম চাষের উপযোগী। বাদাম রোপণ করা থেকে শুরু করে পরিপক্ব হতে সময় লাগে প্রায় তিন মাস। প্রতি বছর বন্যায় ব্যাপক হারে ভাঙনের ফলে মাটি সরে গিয়ে জমিতে বালি মাটি উঠে এসেছে। এই বালু মাটিতে অন্য কোনো ফসল হয় না।
তবে অন্য ফসল না হলেও বালু মাটিতে বাদাম চাষ ভালো হয়। আগের চেয়ে বর্তমানে বাজারে বাদামের চাহিদা বেশি হওয়ায় এটি চাষে ঝুঁকছে চরাঞ্চলের কৃষকরা।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, জেলায় বাদাম চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৩শ ৭৫ হেক্টর জমিতে। তবে অর্জিত হয়েছে ১ হাজার ৮শ ৫০ হেক্টর জমি। এর মধ্যে সদর,উলিপুর ও চিলমারীতে বাদামের আবাদ বেশি হয়েছে।
সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের ভগপতিপুর গ্রামের বাদাম চাষী আলতাফ হোসেন বলেন,আমি এবার দুই বিঘা জমিতে বাদাম আবাদ করেছি। ফলনও ভালো দেখা যাচ্ছে। বাদাম চাষে বিঘা প্রতি সবমিলিয়ে খরচ হয় পাঁচ হাজার টাকার মতো।
এক বিঘা জমিতে বাদাম উৎপাদন হবে ১৫-১৬ মণ। বাদামের মৌসুমে প্রায় ২ হাজার টাকা প্রতি মণ বাদাম বিক্রি করা যায়। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে দুই বিঘা জমির বাদাম ৭০-৭৫ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারব।
একই এলাকার আব্দুল খালেক বলেন,আমি তিন বিঘা জমিতে বাদাম আবাদ করেছি। এক বিঘা জমিতে প্রায় ১০ কেজির মত বীজ লাগে। বাদামের বীজ রোপণ করা থেকে পরিপক্ব হতে তিন মাস সময় লাগে। বাদাম আবাদে লোকসান নাই বললে চলে।
কোনো প্রকার সার ও কীটনাশকের প্রয়োজন হয় না। এক বিঘা জমির বাদাম ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা বিক্রি করা যায়। আর এক বিঘা জমিতে সবমিলিয়ে খরচ হয় মাত্র চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, বাদাম লাভজনক আবাদ। কুড়িগ্রামের ৯টি উপজেলার মধ্যে উলিপুর,চিলমারী ও সদরে বাদামের আবাদ বেশি হয়।
এবার ফলন মোটামুটি ভালো হয়েছে। আশা করছি প্রতি বছরের ন্যায় এবারও কৃষকরা বাদাম বিক্রি করে লাভবান হতে পারবে।