গাঢ় সোনালি রংয়ের নতুন জাতের ক্যাপসিকাম চাষ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে চাঁদপুরের ফ্রুটস ভ্যালি এগ্রো। বাজারে প্রচলিত লাল, হলুদ বা সবুজ ক্যাপসিকামের সঙ্গে নতুন এই ক্যাপসিকামের কোনো মিল নেই।
সুস্বাদু ও মিষ্টি হওয়ায় এটি ফলের মতো কাঁচা খাওয়া যায়। গোল্ডেন ইয়েলো নামের এই জাতটি ঔষধিগুণসম্পন্ন হওয়ায় সারা বিশ্বে জনপ্রিয় বলে জানা গেছে।
চাঁদপুরের শাহতলী এলাকায় পরিত্যক্ত ইটভাটায় বালু জমিতে বিদেশি বিভিন্ন ধরনের ফল চাষ করে আলোচিত হয়েছে ফ্রুটস ভ্যালি এগ্রো।
পুরো প্রকল্পে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। উদ্যোক্তাদের দাবি এখানে সম্পূর্ণ অর্গানিক পদ্ধতিতে ফল চাষ হয়ে থাকে। এর আগে রক মেলন, ক্যান্টালোপ, আইসবক্স ইয়েলোসহ বিভিন্ন মেলন চাষ করে সাফল্য দেখিয়েছে ফ্রুটস ভ্যালি।
প্রধান ফসলের সাথী ফসল হিসেবে পরীক্ষামূলকভাবে বিশ্বখ্যাত গোল্ডেন ইয়েলো নামের নতুন জাতের ক্যাপসিকাম চাষ করেও আশাতীত ফলন হয়েছে।
প্রকল্পের উদ্যোক্তা হেলাল উদ্দিন জানান, বাংলাদেশে তিনিই প্রথম এই নতুন জাতটির স্বল্প পরিসরে বাণিজ্যিক চাষ করেছেন। বিশ্বে ক্যাপসিকামের উন্নত ৩টি জাতের একটি এই গোল্ডেন ইয়েলো ক্যাপসিকাম। যা গোল্ডেন ক্যালফোর্নিয়া ওনডার নামে সারা বিশ্বেই জনপ্রিয় এবং দামি ফসল।
সাধারণ হলুদ ক্যাপসিকামের তুলনায় আকারে অনেক বড় এবং বেশি মাংসল, সুগন্ধিযুক্ত হালকা মিষ্টি এবং খুবই সুস্বাদু। অন্য ক্যাপসিকাম কাঁচা খেতে সুস্বাদু না হলেও গোল্ডেন ইয়েলোর মিষ্টি বেশি হওয়ায় অনায়াসেই কাঁচা খাওয়া যায়।
এ ক্যাপসিকামের রং বাজারে প্রচলিত হলুদ বা লাল ক্যাপসিকামের মতো নয়। এটি গাঢ় অরেঞ্জ। হেলাল উদ্দিনের দাবি গোল্ডেন ইয়েলো প্রচুর ঔষুধিগুণ ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। যার কারণে সারা বিশ্বেই এ জাতের চাহিদা বেশি।
মিষ্টি, সুগন্ধযুক্ত ও রসালু হওয়ায় কাঁচা খাওয়া যায়। তিনি জানান, এই ক্যাপসিকামের এর ঔষধিগুণ অনেক বেশি। বিশেষ করে বয়স্কদের তারুণ্য ধরে রাখতে এটি কাজ করে।
হলুদের তুলনায় অরেঞ্জ কালারের এ ক্যাপসিকামে প্রায় ১৪ গুণ বেশি বিটা ক্যারোটিন এবং দেড় গুণ বেশি ভিটামিন সি রয়েছে। গোল্ডের ইয়েলো উচ্চ রক্তচাপ কমায়, কোলেস্টরেল নিয়ন্ত্রণ করে, ডায়াবেটিকের সুগার নিয়ন্ত্রণ করে। ক্যান্সার কোষ সৃষ্টিতে বাধা দেয়। ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং পটাসিয়ামের বড় উৎস।
চাঁদপুর সদরের ফ্রুটস ভ্যালি এগ্রোতে বিখ্যাত রকমেলন/আইসবক্স ইয়েলো চাষ করে আশাতীত সাফল্যের পর ক্যাপসিকামের পাশাপাশি এখন উন্নত জাতের চেরি টমেটো এবং স্ট্রবেরির চাষ করা হয়েছে।
পুরো প্রকল্পে জমিতে মাটির ওপর মালচিং পেপার বসানো হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ফ্রুটস ভ্যালির চাষাবাদ তদারকি ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদানের জন্যে একজন কৃষি অফিসারকে দায়িত্ব দিয়েছে।
মনিরুজ্জামান স্বপন নামের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জানান, গোল্ডেন ইয়েলো একটি নতুন জাতের ক্যাপসিকাম। বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেছি।
উচ্চ ফলনশীল এ ক্যাপসিকাম আবাদ করে যেকোনো কৃষি উদ্যোক্তাই লাভবান হতে পারেন। মনিরুজ্জামান জানান, প্রকল্পটিতে সম্পূর্ণ অর্গানিক পদ্ধতিতে ফল চাষ করা হচ্ছে।