শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:২৯ পূর্বাহ্ন

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে বিএসএফের ধাওয়ায় নদীতে নিখোঁজ ভাই-বোনের লাশ উদ্ধার

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি / ৪১৫ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : রবিবার, ৩ জুলাই, ২০২২

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে বিএসএফের ধাওয়ায় নদীতে নিখোঁজ ভাই-বোনের লাশ উদ্ধার

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে বিএসএফের ধাওয়ায় নদীতে ডুবে যাওয়া নিখোঁজ দুই শিশুর লাশ ৩৬ ঘন্টা পর নদী থেকে উদ্ধার করেছে ভারতীয় পুলিশ।

রোববার দুপুর একটার দিকে ফুলবাড়ীর কাশিয়াবাড়ী সীমান্তের জিরো লাইনের দিগলা কুরা থেকে ভাই -বোনের লাশ উদ্ধার করেছে তারা। এ সময় দিগলা কুরা নদীর দুইধারে বিজিবি বিএসএফের টহল জোরদার করা হয়েছে। তবে কবে ভারতীয় প্রশাসনের হাত থেকে শিশু দুটির লাশ পরিবারের মাঝে হস্তান্তর করা হবে তাও অজানা ওই শোকাহত পরিবারের কাছে।

এদিকে বিজিবি জানিয়েছেন মৃতদের লাশ এক সপ্তাহ মর্গে রাখা হবে। মৃত শিশুদের কাগজপত্র ও ছবি বিএসএফের কাছে দেয়া হলে ফেরত নিয়ে আসার জন্য পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।

গত শুক্রবার ভারতের দিল্লী থেকে পারভীন খাতুন (৮) ও শাকিবুল হাছান ( ৪) তার বাবা মায়ের সাথে কোরবানি ঈদ পালন করার জন্য চোরা পথে বাংলাদেশে ফিরছিলেন।

এ সময় ভারতীয় দালালরা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তাদেরকে সীমান্তে নিয়ে এসে এক বাড়ীতে গোপনে রাখেন। ওই দিন মধ্য রাতে ৯৪৩ নং মেইন পিলারের পাশে ফুলবাড়ী উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের ধর্মপুর সীমান্ত দিয়ে পার করার চেষ্টা করেন দালাল চক্র। তারা কাটাতার পার করে নদী পথে নিয়ে আসেন।

ভারতের দিগলা কুরা নদীর তীরে তাদেরকে রাখেন । এ সময় ভারতের শেউটি -১ ক্যাম্পের বিএসএফের সদস্যরা টর্চ লাইট জ্বালিয়ে দেখার পর ধাওয়া করে। এ সময় দালালরা তরিঘরি করে নদী পার হওয়ার জন্য বলেন। মৃতের বাবা রহিম উদ্দিন মালপত্র নিয়ে নদীর মাঝ পথে যান।

পারভীন ও শাকিবুল তার মা ছামিনার সাথে নদীতে নামে। কিন্তু তারা কেউই সাঁতার জানে না। স্রোতের টানে রাতের অন্ধাকারে মায়ের হাত থেকে ছুঁটে গিয়ে নিখোঁজ হয়।

এদিকে বিএসএফের ধাওয়ায় নদীতে ডুবে যাওয়ার ৩৬ ঘন্টা পর ভাই বোনের লাশ রোববার সকাল বেলা নিখোঁজ স্থানে নদীর পানিতে ভেসে উঠে। দুইশ গজ দুরে তাদের লাশ স্থানীয়রা দেখে খবর দেয় বিজিবিকে । সম্পন্ন নদীটি ভারতের ভুখন্ড হওয়ায় বিজিবি এ বিষয় বিএসএফকে অবগত করে।

এ নিয়ে দুদেশের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে বিজিবি -বিএসএফের পাহাড়ায় এক ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে ভারতের কুচবিহার জেলার দিনহাটা থানার পুলিশ মৃতদের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

মৃতদের বাড়ী কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার পশ্চিম শুখাতি গ্রামে। তার বাবার রহিম উদ্দিন। মাথার নাম ছামিনা বেগম।

ওই সীমান্তের নদীর তীরে বসবাসকারী ইসাহাগ আলীর স্ত্রী রাবেয়া বেগম জানান সকাল বেলা পাশাপাশি দুইটি লাশ ভাসছে । আমরা দেখে এলাকায় খবর দেই। পরে শতশত লোকজন লাশ দেখার জন্য নদীর পারে জড়ো হয়। বিজিবি এসে আমাদেরকে ঘটনাস্থে না যাওয়ার জন্য বলে।

এ প্রসঙ্গে লালমনিরহাট ১৫বিজিবির অধীন কাশিপুর কোম্পানি কমান্ডার কবির হোসেন জানান, নদীতে দুইটি লাশ ভাসছে এ নিয়ে বিএসএফকে অবগত করা হয়েছে। সে কারণে উভয়ের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৈঠকে ভারতের ১৯২ বিএসএফের শেউটি -১ ক্যাম্পের বিএসএফের ইন্সপেক্টর এস এইচ শংকর কুমারসহ ৬সদস্য দলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন । তারা আরো জানিয়েছেন মর্গে শিশুদের লাশ এক সপ্তাহ থাকবে । বাংলাদেশী কাগজপত্র পাওয়া গেলে মানবিক দিক বিবেচনায় ব্যবস্থা নিবেন ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ