শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৪৪ পূর্বাহ্ন

কান্নার ছায়া তলে মায়ের করুন আকুতি! বে-জম্মা দারিদ্রতার নিঃশ্বাষে ভারি!

ডাকবাংলা বাজার, ত্রিমহনী, সদর ঝিনাইদহ / ৫৪১ বার এই সংবাদটি পড়া হয়েছে
প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ৫ জুলাই, ২০২২

ওরা যদি নিষেধ করে?
*********লেকখঃ  ডাক্তার বিল্লাল হোসেন******
মা মারে আইচ্ছা আমি তোর ছাওয়াল না ক ভৈদ্দিন ইরাম কইরে কেও কুনুদিন উপোস থাকতি পারে ক মা? কি রে মা কতা কচ্চিস নে ক্যান? এই মনমা কোন সুমৈন্দি তো জন্মদিল কতি পারিস ?আমার যে ভুকচানি ল্যাইগে মলাম।
কান্নার শক্তি হারিয়ে গেছে এক দরিদ্র মায়ের এক কশ জলও চোখে নেই, ছেড়া কাপড়ের ঘোমটা টেনে নিদারুন এক শব্দে কান্নার চেষ্টা হাহাকার মাখা বাতাসে ভরে যাচ্চে পেট কান্না ছন্দে খচ্চর খুদার জ্বালাটা পুড়িয়ে মারছে এক অসহায় মায়ের বুক।
মা ওমা, মাগো তুই ফাপাচ্চিস ক্যানে রে মা এই মা কতা ক কতা ক ওহ আমি খাতি চায়চি বুইলে ইরাম কইরে ——-
বুকে জড়িয়ে ধরে সোনারে আমার আব্বা ইট্টু পরেই আমি তোমার খাতি দেব, বাজান! কান্নায় ছায়া তলে মায়ের করুন আকুতি বিকুতি বে-জম্মা দারিদ্রতার নিঃশ্বাষে ভারি হয়ে আসছিল।
এই মা, মারে আমি আর কুনু দিন খাতি চাবো না তুই কান্দিস নে মা।
ওমা মারে কলাম কান্দিস নে,
এই দেক মা দেক দেক ,
আমার প্যাটটা কিরাম ভরা ডমডম কচ্চে তুই কান্দিসনে আমার খিদে নেই, কলেত্তে প্যাট্টা ঢাম কইরে পানি খেইয়ে আইচি,
কি করবো ক মা, প্যাট্টা মদিন কিরাম যেন মুড়া মেইরে বেতা কচ্চে রে মা।
অভাগিনি মা ছেলেকে বুকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে কেদে উঠলো।

ও ছইনোর মা কি কচ্চ তুমি এদিকি এক বার এইসো দিনি দেক হে হে কি নিয়ে আয়চি দেক আমার ছৈনোর খিদে আর থাকপে না।
শালা বয়রার পালের জন্নি বাগানে কচু তেপাতা আলু পাওয়ার জো আছে নাকি? শালাগের যেন খিদে লেগেই থাকে।
এক দৃষ্টিতে ছইনোর মা তার স্বামীর মুখের দিকে তাকি দেখছিল আর কথা গুলো শুনছিল। শুয়োরের মুখের খাবার এনে আমরা খাচ্চি আবার ওদেরই গালি দিচ্চি ঠোটের কোনে এক চিলতে করুন হাসির মৌন ঝিলিক মুখ ফুঠে বেরুলো
দেও দেকিনি আমার আব্বার এটু সেদ্দ কইরে দি তে পাতা আলু ।
বাগানে জন্মে থাকা তেপাতা আলু সিদ্দের কাজ চলছে এদিকে ছইনোর বাপ বসে আছে।
হ্যাগো আমি ইট্টু বিলির দিকিরি যাবো ছ্ইনোর বাপ বললো
মা ঃক্যানে বিলি কি তুমার আলু সেদ্দ কইরে দিচ্চি খেইয়ে ইট্টু ঝৈড়র বাড়ি যাও কয়ডা পয়সা দেয় কিনা তুমি পাবা তাও কাজের টাকা আর বিলি কি
বাপঃ বিলি নাকি দারুন ঘেচু হইয়েছে তায় তুলে আনতি যাবো যদি রাতির খাওয়াডা হয়।
মাঃ দরকার নেই ও বিলি শুনিছি বিরাট জোক রক্ত খেয়ে দফা রফা করে দেবেনে।
বাপঃ হা হা হা কেদে ফেললো বউ দেক দিনি এই দেহডায় রক্ত আছে কিনা। আর থাকলিও সিডা ভালো কিনা জোকে আমার কাচে কিনারে আসপে নানে, ঝৈড়র মতো জোকেরা যকন রক্ত শেষ কত্তি পারিনি বিলির জোকে তো পারবেই না,
ঝৈড় ঐ বিলির জোকের চাইতে কম কিশি ক দিনি ,জোকের রক্ত চুসার চাইতে প্যাটের খিদের জ্বালাডা কি বেশি না ক তুই ক দিনি বউ ।
বিলির জোকে আর কট্টুক খাবে?
বাজান আর নিবা আলু?
ছইনো ঃ না আব্বা বিরাট প্যাট ভইরে গিয়েছে আব্বা ঐ শুয়োর গুলোর রিশোদ কত্তি পারোনা আমাগের বাগানের আলু গুনু যেন না খায়।
বুকে জরিয়ে ধরে ডুকরে কেঁদে উঠে ছইনোর বাপ বাজান রে ওগুনু ওগারতা ওরা যদি রিশোদ করে তালি কি করবা? ব চোখের জলে বুক ভাসিয়ে ছেলে ছেড়ে দিয়ে উর্ধশ্বাসে ছুটছে বিলের দিকে অনুসন্ধান রাতের খাবারের।
একটি প্রশ্ন ঝৈড়রা আর কতদিন থাকবে এই ঝৈড়দের অত্যাচারের ঝড় আর কতদিন ছৈনোর বাপেদের সকল স্বপ্ন ফিকে করে দিয়ে উদর পুর্তি করে যাবে এদের কি শেষ নেই ?এরা কি যুগযুগ ধরে আসতেই থাকবে?

লেখক বিল্লাল হোসেন 

ডাকবাংলা বাজার, ত্রিমহনী, সদর ঝিনাইদহ। 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ