ঝিনাইদহে ইউপি চেয়ারম্যান নিলুর বিরুদ্ধে সাংবাদিক লাঞ্ছিত করার অভিযোগ! নিন্দার ঝড় সাংবাদিকদের
ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
বুধবার সকাল ১১ টায় ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ৪ নম্বর হলিধানী ইউনিয়নে ভি জি এফ চাউল বিতরণের সংবাদ সংগ্রহ করতে যান ঝিনাইদহ জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সদস্য দৈনিক সত্য পাঠ ও দৈনিক রুপালী দেশের ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি সাহিদুল এনাম পল্লব। এই সময়ে সে ইউনিয়ন পরিষদে থাকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এনামুল হক নিলু কর্তৃক লাঞ্ছনার শিকার হয় বলে অভিযোগ উঠেছে।
সাংবাদিক শাহিদুল এনাম পল্লব জানান, বুধবার সকাল ১১ টার দিকে ভিজিএফ চাউল বিতরণের সংবাদ সংগ্রহের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে গেলে তাকে প্রথমে ইউনিয়ন পরিষদের প্রবেশ করতে গ্রাম পুলিশ বাঁধা দেয়। তারা বলে বাইরের কোন লোকদের ইউনিয়ন পরিষদে ঢোকা যাবে না চেয়ারম্যানের নিষেধ আছে। তাদের বাধা উপেক্ষা করে সে ইউনিয়ন পরিষদে প্রবেশ করে। তখন তার উপস্থিতিতে সঠিকভাবে চাউল বিতরণ করছিল। এই সময়ে একজন বলে যে চেয়ারম্যান ভিতর আছে আপনাকে সেখানে যেতে বলেছে। ভিতরে গেলে চেয়ারম্যান প্রথমেই তাকে বলে যে আপনার ক্যামেরা বন্ধ করেন।
প্রতিউত্তরে সাংবাদিক জানাই আমার ক্যামেরা বন্ধ আছে। তখন চেয়ারম্যান সাংবাদিক কে প্রশ্ন করে আপনাকে ভিজিএফ চাউল বিতরণের এখানে আসতে পাঠিয়েছে কে? ভিজিএফ চাউল সঠিকভাবে বন্টন হচ্ছে কিনা সেটা দেখার জন্য পিআইও, ট্যাগ অফিসারসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আছে। এই কথা বলে কে আপনার পারমিশন দিয়েছে তার কোন কাগজ থাকলে তাকে দেখানোর জন্য বলেন। পরে তিনি আমার উপর চরমভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং বলে যে আমাকে এ রুমে আটকে রাখা হবে দেখি আপনি কি করতে পারেন।
আরো বলেছে আমি কি চাউল মেরে খাওয়ার জন্য এখানে বসে আছি সকাল থেকে ১৪ জন সাংবাদিক এসেছে আমি তাদের কাছে শুধু কৈফত দেব। আপনি কি মনে করেছেন ইত্যাদি ইত্যাদি বলা শুরু করেন। তখন আমি জানতে চায় যে আপনি গত ঈদুল ফিতরের চাউল দেয়ার সময় দরিদ্র মানুষের চাউল কম দিয়েছিলেন যা আমি বিভিন্ন স্পটে মেপে পেয়েছিলাম। এই কথা বলার পর সে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে অন্য একজনকে দিয়ে দরজা বন্ধ করতে গেলে আমি জোর-জবরদস্তি করে দরজা খুলে বাইরে বেরিয়ে আসি। আমি বাইরে বেরিয়ে আসলে তখন সে পরিষদের উপস্থিত ব্যক্তিদের বলেন যে এই সাংবাদিককে আটক করে রাখো এবং সে যেন বাইরে যেতে না পারে। এই অবস্থায় পরিষদ থেকে বেরিয়ে আসেন সাংবাদিক সাহিদুল এনাম পল্লব।
এই সময় চেয়ারম্যান চিল্লাতে চিল্লাতে বলেন যে আমি যে চাউল দিচ্ছি তা সঠিকভাবে দিচ্ছি। পরে যদি কেউ বলে যে আমি কম করে চাউল দিচ্ছি সে কথা আমি গ্রহণ করবো না
এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদে অবস্থানরত ট্যাগ অফিসার হামিদুল ইসলামের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন আপনারা যদি চাউল মেপে দেখতে চান তো এখান থেকেই দেখতে পারেন এখান থেকে বাইরে গেলে তা মাপলে তার দায়িত্ব আমরা গ্রহণ করবোনা তবে সাংবাদিক প্রবেশে কোন বাধা নিষেধ নেই।
সাংবাদিক প্রবেশের ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা নিউটন বাহিন এর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন যে কোন জায়গায় সাংবাদিক যেতেই পারে তার জন্য তার উপর কোন নিষেধাজ্ঞা নেই এবং কারো পারমিশন লাগে না
আমি আর একজন অফিসার নিয়ে হলিধানি ইউনিয়ন পরিষদে যাচ্ছি।
ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কর্তৃক সাংবাদিক লাঞ্ছিতের ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ঝিনাইদহ জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক শাহিদুর রহমান সন্টু, ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের সভাপতি এম রায়হান। আরো ঝিনাইদহ জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটের প্রচার সম্পাদক এসএম রবি, দপ্তর সম্পাদক জাহিদ হাসান, সংবাদপত্র বিষয়ক সম্পাদক মুক্তার হোসেন সহ ভোরের কাগজের জেলা প্রতিনিধি রোকনুজ্জামান মিলন।
উক্ত ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে এই চেয়ারম্যানের যে সমস্ত দুর্নীতি অন্যায় এবং দখলবাজের সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখার জন্য জেলা প্রশাসকের নিকট দাবি করেন। তার এত ক্ষমতার উৎস কোথায় তাও খতিয়ে দেখা হবে বলে সকলে জানান।